ইরানের হামলা: চিকিৎসা নিতে তেল আবিবে মার্কিন সেনারা

 

অনলাইন ডেস্ক

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত মার্কিন সেনাদের ইসরাইলের তেল আবিব নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বুধবার ইরাক থেকে আহত মার্কিন সেনাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছে ইরানি সংবাদমাধ্যম।

ইসরাইলের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে পার্সটুডের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত ২২৪ জন মার্কিন সেনাকে তেল আবিব নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হবে।

ইরাকের একটি সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন বিমান ঘাঁটি আল-আসাদে থাকা রাডার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। জঙ্গিবিমান, ড্রোন ও হেলিকপ্টারসহ সামরিক সরঞ্জামের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইরান বলছে, তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের ৮০ জন সেনা মারা গিয়েছে।

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ইরাকে অবস্থিত দুটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। আল-আনবার প্রদেশে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি দুটি হলো, আল-আসাদ ও ইরবিল।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইরাকের যে অঞ্চলে মার্কিন এবং যৌথ বাহিনীর সেনাঘাঁটি রয়েছে তার মধ্যে দুটি ঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রায় এক ডজন ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে ইরান। এটিকে তারা ‘আমেরিকার গালে থাপ্পড়’ বলে মন্তব্য করেছে।

এদিকে ঐ হামলার পর ইরাকের রাজধানী বাগদাদের কূটনৈতিক এলাকা গ্রিন জোনে ফের রকেট হামলা হয়। বুধবার রাতে দুটি রকেট হামলা চালানো হয়।

এমন অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হঠাৎ করে সুর নরম করতে দেখা যায়। হামলার ঘটনায় যদিও তিনি বলেছেন যে, ইরানের হামলায় কোনো মার্কিন সেনা ও কোন মার্কিন নাগরিকের ক্ষতি হয়নি।

অন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কিনার থেকে ফিরে এসেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ইরান তার আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। মনে হচ্ছে ইরান আর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাবে না।

তবে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, অপরাধযজ্ঞের চূড়ান্ত জবাবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পা কেটে দেয়া হবে। এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিনি শেকড় উপড়ে ফেলার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসকে পাঠানো চিঠিতে ইরানি রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরেও ইরাকের ভূখণ্ডগত অখণ্ডতাকে সম্মান করে ইরান।

সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কুদস ফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যা ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। তবে শেষপর্যন্ত যুদ্ধে না জড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।

এদিকে ট্রাম্পের যুদ্ধ-ক্ষমতা কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে বৃহস্পতিবার ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। হাউস স্পিকার ন্যানসি পেলোসি বলেন, আমেরিকার জনগণকে নিরাপদ রাখতে, ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে ও মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের কোনো সঙ্গতিপূর্ণ কৌশল নেই, তা পরিষ্কার করেছেন প্রেসিডেন্ট।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেন, সোলাইমানি হত্যার মধ্য দিয়ে ইরানের বিরুদ্ধে কিছু বাধা কাটিয়ে উঠেছি। কিন্তু আমরা দেখছি, সময়ই সব বলে দেবে।