ডিজিটাল ডেটাবেজে বাছাই হচ্ছে প্রার্থী; ত্যাগী ও যোগ্যরাই পাবেন চূড়ান্ত মনোনয়ন

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেট বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের প্রতি সাংগঠনিক ঐক্য রক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ কোন্দল এড়িয়ে চলার কঠোর নির্দেশ দিয়েছে বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, প্রার্থিতার প্রচারণা নিয়ে কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ বিরোধ দেখা দিলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ দলীয় শাস্তি নেওয়া হবে।

রোববার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের ১২৯ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীকে নিয়ে এই বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব জানান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী, এবারের প্রার্থী বাছাইয়ে ত্যাগী, যোগ্য ও জনপ্রিয় নেতাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “মনোনয়ন ঘোষণার পর সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। একজন প্রার্থী নির্ধারিত হলে বাকিদের দায়িত্ব হবে তাকে বিজয়ী করা।”

দলীয় সূত্রমতে, এবারের প্রার্থী বাছাইয়ে অত্যাধুনিক তথ্যভিত্তিক যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হচ্ছে। একটি ডিজিটাল ডেটাবেজে প্রার্থীর অতীত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, জনসম্পৃক্ততা, সাংগঠনিক দক্ষতা, পারিবারিক ঐতিহ্য, ত্যাগ, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপস্থিতি— এই পাঁচটি মূল যোগ্যতা বিবেচনা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, পাঁচটি অযোগ্যতা হিসেবে বিদ্রোহী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা, ফৌজদারি অপরাধের ইতিহাস, আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুবিধা গ্রহণ, অপরাধে সম্পৃক্ততা ও নির্বাচনী এলাকায় অগ্রহণযোগ্যতা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এই ১০টি সূচকের ভিত্তিতে স্বয়ংক্রিয় র‌্যাংকিং তৈরি করে তা মনোনয়ন কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে।

বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা বৈঠকে জানিয়েছেন, প্রতিটি আসনে একজনকে চূড়ান্ত প্রার্থী এবং বিকল্প হিসেবে আরও দু’জনের নাম সংরক্ষণ করা হবে। চূড়ান্ত প্রার্থীর কোনো সমস্যা দেখা দিলে বিকল্প তালিকা থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। এছাড়া যারা এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না, তাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতিতে সক্রিয় থাকার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।

বৈঠক শেষে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “মহাসচিব মূলত দলীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কাউকে মনোনীত বা বাদ দেওয়া হয়নি।” কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ জানান, এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল প্রার্থীদের মধ্যে ঐক্য রক্ষা করা এবং মাঠ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা ঠেকানো।