শ্রীমঙ্গল পৌরসভায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার বেহাল দশা

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের পৌরসভায় পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার একেবারে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। অল্প বৃষ্টিতেই পানিতে থৈ-থৈ করে ওঠে গোটা শহর। যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু নজরদারীর অভাবে বছরের পর বছর ধরে শহরের ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনার কারণে পথ চলাচলে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শহরবাসী। এমনকি দেশ-বিদেশ থেকে বেড়াতে আসা বিভিন্ন পর্যটকদেরও পানিবন্দি দশায় ভুগতে হয় প্রতিনিয়ত।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের ঢাকা-সিলেট ভায়া মৌলভীবাজারের প্রধান সড়ক শহরের হবিগঞ্জ রোড ও তৎসংলগ্ন এলাকায় প্রায় প্রতিদিন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, শহরের ব্যবসায়ী, পথচারীসহ অন্যান্যদেরকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে বৃষ্টির সময়ে শহর ঘুরে দেখা যায় এর করুণ চিত্র।

সেন্ট্রাল রোডস্থ রহিম ট্রাভেল্স এর ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, উপযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছরই শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বছর বছর ড্রেনেজ ব্যবস্থার নামে কাজ করা হলেও কোন ভাবেই এর প্রতিকার হচ্ছে না। জলাবদ্ধতা লেগেই আছে।

ব্যবসায়ী অসীম মজুমদার বলেন, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার অধীনে নির্দিষ্ট করে কোন ডাস্টবিন না থাকার কারণে অনেক হোটেল-রেস্তোরাঁ বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকেরা বিভিন্ন বর্জ্য আবর্জনা ড্রেনের মধ্যে ফেলে যায়। এতে অনেক ক্ষেত্রে ড্রেনের পানি চলাচলের গতিপথ বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে ড্রেনের পানি উপরে উঠে গিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

শহরের প্রধান সড়কে এমন জলাবদ্ধতায় অতিষ্ট হয়ে পথচারী একরামুল কবীর, রশিদ মিয়া, আনোয়ার হোসেন ও সাদ্দাম মিয়া বলেন, জলাবদ্ধতার জন্য রাস্তায় যান চলাচল তো দূরের কথা, ঠিকমতো পায়ে হেঁটে রাস্তা পারাপার করাই সম্ভব হয় না। এতে করে পথ চলাচলে প্রতিদিনই নানা বিড়ম্বনায় পড়েন তারা।

কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী কাকলী দেব, বাবলী রায়, রতন দাস, ইসমাইল মিয়া ও মামুন মিয়া বলেন, এ শহরের বিভিন্ন সড়কে প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার ছাত্র-ছাত্রী পায়ে হেঁটে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির দিনে শহর ঘিরে জলাবদ্ধতার কারণে পথ চলাচলে তারা মারাত্মভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে ছেলেরা হাঁটুর উপরে প্যান্ট তুলে পথ চলাচল করলেও এসময় মেয়েদেরকে চরম বিপাকে পড়তে হয়।

সরকারি প্রাথমিক স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষক অঞ্জন দেব বলেন, শ্রীমঙ্গল পৌরসভা একটি ‘এ’ ক্লাস পৌরসভা। এ শহরে জলাবদ্ধতার এমন নাজুক পরিস্থিতি মোকাবেলায় পৌর কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া মধু বলেন, শহর উন্নয়নের বিভিন্ন স্থানে পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে শহরের পুরান বাজার ও সেন্ট্রাল রোডে কাজ শেষ হয়েছে।