ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা দুই ফার্স্ট লেডির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা অবৈধ অভিবাসী পরিবার থেকে তাদের শিশুদের বিচ্ছিন্ন করার হোয়াইট হাউসের বিতর্কিত অভিবাসন নীতির প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি লরা বুশ৷

ওয়াশিংটন পোস্টে লেখা একটি প্রতিবেদন লরা বুশ বলেছেন, শিশুদের তাদের মা-বাবা থেকে আলাদা করে দেয়া একটি নিষ্ঠুর, অনৈতিক এবং হৃদয় বিদারক কাজ।

তার এই মন্তব্য অভিবাসন বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে বিতর্ক আরো বৃদ্ধি করেছে।

এর আগে বর্তমান ফার্স্ট লেডি মেলেনিয়া ট্রাম্পও এই ব্যাপারে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। মেলানিয়া সাধারণত রাষ্ট্রীয় নীতি নিয়ে প্রকাশ্য মন্তব্য করেন না৷ তবে এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন তিনিও৷

তার গণযোগাযোগ পরিচালক স্টিফানি গ্রিশাম সিএনএনকে জানিয়েছে, ‘মিসেস ট্রাম্প পরিবার থেকে শিশুদের আলাদা করে ফেলার বিরুদ্ধে৷ তিনি আশা করেন, শিগগিরই তারা এক হবে এবং একটি সফল অভিবাসন নীতি তৈরি হবে।’

গ্রিশাম বলেন, ‘মেলানিয়া বিশ্বাস করেন, আমাদের এমন একটা দেশ হতে হবে যেখানে সব আইন মেনে চলা হয়, কিন্তু দেশ পরিচালনা করা হয় হৃদয় দিয়ে।’

রিপাবলিকানদের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে নতুন অভিবাসন নীতি নিয়ে বৈঠকে বসার কথা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের৷

ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেক্সিকো সীমান্তেই অভিবাসী শিশুদের তাদের পরিবারের কাছ থেকে আলাদা করে ফেলা হচ্ছে৷ যুক্তরাষ্ট্র তো বটেই, এই নীতির সমালোচনায় সরব হয়েছে জাতিসংঘও৷

সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান জাইদ রাআদ আল হুসেইন জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের এক বৈঠকে এমন নীতি থেকে সরে আসতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন৷

তিনি বলেন, ‘শিশুদের ওপর এমন নির্যাতন চালিয়ে বাবা-মাকে অভিবাসন থেকে নিরস্ত করার চিন্তাকে প্রশ্রয় দেয়া যায় না।’

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন ডেমোক্র্যাটদের৷ একটি অভিবাসন আইন পাসে তাদের সমর্থন পেলেই এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব বলেও মন্তব্য তার৷এক টুইটে ট্রাম্প বলেছেন, ‘নতুন আইন পাসে ডেমোক্র্যাটদের রিপাবলিকানদের সাথে কাজ করা উচিত৷ … ডেমোক্র্যাটরা তিনটি কাজে পারদর্শী, উচ্চ কর, উচ্চ অপরাধের হার এবং বাধা দেয়া।’

মধ্য এপ্রিল থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত অন্তত দুই হাজার শিশুকে তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে৷ তবে কিভাবে পরবর্তীতে তারা আবার তাদের পরিবারে ফিরবে, এ নিয়ে কারো নেই কোনো স্পষ্ট ধারণা৷

আইনপ্রণেতারাও এই নীতির সমালোচনায় মুখর হয়েছেন৷ তাদের মধ্যে আছেন কংগ্রেসের অনেক রিপাবলিকানও৷ মাইনের রিপাবলিকান কংগ্রেসওম্যান সুজান কলিন্স মনে করেন, অভিবাসীদের ভুল বার্তা পাঠাচ্ছে প্রশাসন৷ ‘সন্তানদের নিয়ে সীমানা পাড়ি দিলে তাদের তোমার কাছ থেকে কেড়ে নেয়া হবে৷ কিন্তু এই নীতি নির্দোষ শিশুদের মানসিকভাবে আঘাত করছে, যা আমাদের চিন্তাভাবনার পরিপন্থী।’

ট্রাম্পের নীতির বিরোধিতা করে প্রতিবাদ হয়েছে নিউইয়র্ক ও টেক্সাসে৷

সূত্র: বিবিসি ও ডয়েচে ভেলে