সিলেটে রাইডার রাজু অপহৃত: ২৪ দিনেও গ্রেফতার নেই

সিলেটে মোটর সাইকেল রাইডার রাজুর জ্ঞান ফিরেছে। কে বা কারা তাকে অপহরণ করে মারপিট করেছে। মৃত ভেবে যাত্রী ছাউনিতে ফেলে যায়, সবকিছু খোলে বলেছে। তারপরও ঘটনার ২৪ দিনেও গ্রেফতার হয়নি অপহরণ চক্রের কেউই। উদ্ধার হয়নি তার মোটর সাইকেল ও টাকা। গুরুতর আহত রাজু এখনো সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের ১১ নং সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। রাজু সিলেট নগরের উত্তর বালুচর আল-ইসলাহ ১৮/২ এর মৃত আকদ্দছ আলীর পুত্র। তার মূল বাড়ি সিলেটের বিয়ানী বাজার উপজেলার ঢারখখাই আদিনাবাদ কাপন গ্রামে। উত্তর বালুচর বোনের বাসায় থেকে মোটর সাইকেল রাইডারের কাজ করতো সে।
জানা গেছে- মোটর সাইকেল রাইডার গোলাম কিবরিয়া রাজু গত ৮ এপ্রিল মোটর বাইক নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেন নি। রাত ১০টার দিকে তাকে মোটরবাইকসহ কদমতলী হুমায়ুন রশিদ চত্তর এলাকায় কেউ কেউ দেখতে পান বলে তার ভাই গিয়াস জানান। ওই দিন রাত ১১টার পরে তার আর কোন হদিস মিলেনি। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরদিন সকাল পৌণে ৮টার দিকে এসএমপির মোগলাবাজার থানাধীন গফুরগাঁও এলাকার একটি যাত্রী ছাউনী থেকে গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ। এসময় তার সাথে থাকা মোটর বাইক,মোবাইল ফোন ও টাকা কিছুই পাওয়া যায়নি।
খবর পেয়ে স্বজনরা ওসমানীতে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন । পরে তাকে নগরের উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ১২ এপ্রিল তাকে ফের ওসমানী হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখন থেকেই রাজু ওসমানী হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
এ ঘটনায় রাজুর ভাই গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে গত ১০ এপ্রিল এসএমপি’র মোগলাবাজার থানায় একটি মামলা {নং-০৭(৪)২১} করেছেন। মামলায় রাজুর প্রেমিকা খালেদাসহ ৫ জনকে সন্দেহভাজন আসামী করেন তিনি।
মামলার বাদী গিয়াস উদ্দিন জানান- তার ভাই গোলাম কিবরিয়া রাজুর সাথে এক বছর পূর্ব থেকে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার মকবুলাবাদ গ্রামের ফারুক মিয়ার মেয়ে খালেদা আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারের অসম্মতিতে খালেদা রাজুকে বিয়েও করে। কিন্তু স্বজনরা রাজুর সাথে খালেদাকে ঘরসংসার করতে দেননি। উল্টো খালেদাকে তালাক দেওয়ার জন্য রাজুর উপর চাপ অব্যাহত রেখে আসছিল। কিন্তূ রাজু তালাক দিতে রজি হচ্ছিল না।
বাদী গিয়াস আহমদের ধারনা রাজুর প্রেমিকা খালেদা আক্তার, খালেদার ভাই লিটন মিয়া, সম্পর্কের ভাই আব্দুল কাদির পিয়া ও আব্দুল মালিক মিলে রাজূকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে মোটর সাইকেল মোবাইল ফোন ও টাকাকড়ি রেখে মারপিট করে মৃত ভেবে তাকে যাত্রী ছাউনিতে ফেলে চলে যায়। পরে তিনি এ মামলা করলেও ঘটনার ২৪ দিনেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ফলে ঘটনার নেপথ্যের নায়িকা খালেদা ও তার স্বজনরা বহাল তবিয়তে থেকে বাঁদিকে নানা হুমকি ধমকি দিয়ে চলেছে।
এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম জানান, ভিকটিম এখনো পূরোপুরি সুস্থ নয়। জিজ্ঞাসাবাদে তার দেওয়া বক্তব্য অনেকটা এলোমেলো। তাই ঘটনার ক্লু সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আরেকটু সুস্থ হলে ফের তার বক্তব্য গ্রহণ করে জড়িতদের সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে ঘটনার তদন্ত চলছে এবং সন্দেহভাজন আসামীদের প্রতি পূলিশী নজরদারি রয়েছে। অনুরূপ বক্তব্য দিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা থানার এসআই কৌশিক।