বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তারা দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র চলছে তা ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করতে হবে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, পাকিস্তানের ২৩ বছরের শোষণ-নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে মুক্তিযুদ্ধ আমাদের জন্য অনিবার্য ছিল। বাঙালীর সততা ও একাগ্রতার কারণে ঐক্যবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতার লাল সূর্য্য ছিনিয়ে আনে। বক্তারা আরো বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ছিল অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্টা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জন্মের পরিস্থিতি তৈরি করা এবং দিন দিন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধ ধ্বংস করে দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার যে চক্রান্ত চলছে তা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) বিকেলে নগরীর বন্দরবাজারস্থ ব্রহ্মমন্দির হলে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি এডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দেবের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য্য। প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি সমাজবিজ্ঞানী ড. তুলশী কুমার দাশ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহীন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট মহানগর শাখার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মন, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপিকা শ্যাম পুরকায়স্থ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিবেকাচন্দ সমাজপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পান্না লাল রায়।
এডভোকেট বিজয় কৃষ্ণ বিশ^াসের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অধ্যক্ষ ভাস্কর রঞ্জন দাস, সুব্রত দেব, অধ্যাপক রজত কান্তি ভট্টাচার্য্য, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ তপন মিত্র, কৃপেশ পাল, মলয় পুরকায়স্থ, রঞ্জন ঘোষ, রজত কান্তি গুপ্ত, বাবুল দেব, অপন দাস, রাজ কুমার পাল রাজু, জিডি রুমু, ধীরেন্দ্র ধর প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধারণ করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক নিপীড়ন-নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করে শাল্লার নোয়াগাঁও সহ অতীতের সব সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন। বক্তারা আরো বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের কোন বিচার না হওয়ায় দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বেড়ে চলেছে। বক্তারা বলেন, দেশকে পিছিয়ে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র চলছে তা ঐক্যবদ্ধ মোকাবেলা করতে হবে। সভার শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশ করা হয় এবং অনুষ্ঠানের অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। সব শেষে রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ সিলেটের সমন্বয়ে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞপ্তি