জগন্নাথপুরে লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফসল কৃষকদের গোলায়

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বোরো কাটা শেষ হয়েছে। এতে সরকারি লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফসল কৃষকদের গোলায় উঠেছে। এবার কোন রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই বাম্পার ফসল গোলায় তুলতে পারায় কৃষক কূলে আনন্দ বিরাজ করলেও ফসল রক্ষা বেড়িবাধের কাজ শেষ হলেও পুরো বিল না পাওয়ায় পাওনাদারদের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পিআইসিরা।

জানাগেছে, বিগত বছর হাওর ডুবির ঘটনায় কাচা ধান তলিয়ে যায়। এতে কৃষক সহ দরিদ্র লোকজনের মধ্যে হাহাকার দেখা দেয়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার সারা বছর চাল ও টাকা দিয়ে সহায়তা করায় কোন প্রভাব পড়েনি।

এ বছর জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৃষকদের জমি চাষাবাদের জন্য নানাভাবে উৎসাহ দেন। সেই সাথে সরকার বিনামূলে সার-বীজ সহ নানা কৃষি উপ-করণ দিয়ে কৃষকদের সহায়তা করে। যে কারণে এবার অন্য বছরের তুলনায় বেশি জমি আবাদ হয়। অবশেষে বৈশাখ মৌসুমে ধান কাটা শুরু হয়। প্রথমে শ্রমিক সংকট থাকলেও পরে তা সমাধান হয়ে যায়। তবে ব্রি ২৮ ধানে সামান্য ছিটা থাকলেও অন্য জাতের সকল ধানের বাম্পার ফলন হয়।

এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অফিসের পৌর উপ-সহকারি কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, এবার জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওর ও মইয়ার হাওর সহ ৯টি ছোট-বড় হাওর সহ অন্যান্য পতিত ও খাল-বিল মিলিয়ে মোট ২০ হাজার ৩৩৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়। এতে সরকারি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ২১ হাজার ৩৩৩ মেট্রিক টন ধান। তবে এবার বাম্পার ফলন হওয়ায় সরকারি লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফসল কৃষকদের গোলায় উঠেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘ প্রায় এক মাস পর অবশেষে ৬ মে রোববার উপজেলার সকল হাওরের শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। তবে হাওর ব্যতীত অন্যান্য জমির প্রায় ১০ ভাগ ধান কাটা এখনো বাকি রয়েছে। তাও আগামী ২/১ এক দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

এদিকে-হাওরের ধান কাটা শেষ হলেও পুরো বিল পায়নি পিআইসিরা। যে কারণে তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। জানাগেছে, পিআইসি কমিটির মাধ্যমে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এবার ৫২ কিলোমিটার নলুয়ার হাওর বেবিাধে মাটি কাটার কাজ হয়। প্রায় ৩ সপ্তাহ আগেই শতভাগ বেড়িবাধের কাজ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত পুরো বিল না পাওয়ায় পিআইসিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।

পিআইসি কমিটির সভাপতি ও জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী ছালিকুর রহমান সহ অন্যান্য পিআইসিদের মধ্যে অনেকে জানান, কাজ শেষ হওয়ার পরও পুরো বিল না পাওয়ায় মাটি কাটার শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে শ্রমিকদের পাওনা টাকার চাপে পিআইসিগণ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তাই দ্রæত পুরো বিল দিতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জগন্নাথপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি প্রকৌশলী (এসও) নাসির উদ্দিন বলেন, চলতি মাসের মধ্যেই সকল পিআইসিদের বিল দেয়া হবে।