এমসি কলেজের ক্যাম্পাস রাজনীতি নিয়ে ছাত্রদল নেতা সেলিমের আবেগপ্রবণ স্ট্যাটাস

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ এম. সি কলেজের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে বুধবার (২০ জানুয়ারি) ফেসবুকে আবেগপ্রবণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন সিলেট এম.সি কলেজ ছাত্রদলের সাম্প্রতিক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম আহমদ সাগর। ফেসবুক থেকে নেওয়া তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

এস এসসি শেষ করে সিলেট সরকারি কলেজে ভর্তির পরপরই প্রাণের সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাথে নিজেকে জড়িত করে ফেলি। সালটা ছিলো ২০১০ ইং, সেই সময়ে সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রদলে যারা ছিলেন কেউ অপরিচিত নয়। ক্যাম্পাস রাজনীতি কি, কিভাবে করতে হয় তার প্রথম শিক্ষা সিলেট সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পাওয়া। ছাত্রদল এবং ছাত্রলীগ মুখামুখি বেঞ্চে বসে রাজনীতি চর্চা করতাম। কেউ যদি বলে ছাত্র রাজনীতি শিখতে কোথায় যাওয়া উচিত? বলবো সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্ররাজনীতি অবলোকন করেন। গেলে দেখবেন ছাত্রদল এবং ছাত্রলীগ কিভাবে মুখোমুখি অবস্থানে কিভাবে রাজনীতি করে। যাই হোক এগুলো বলে হয়তো বুঝাতে পারবো না। অতঃপর ২০১২ সালের এইচ এসসি (মানবিক শাখা) পরীক্ষায় জিপিএ “৫’ পেয়ে উত্তীর্ণ হই। দুঃখের বিষয় যে, এমসি কলেজ ক্যাম্পাসের  রাজনীতির মোহে পরে  শাহজালালা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়য়ে চান্স পেয়েও ভর্তি হইনি! সাবজেক্ট যাই হোক, ভর্তি হলে হয়তো আজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকতাম। আব্বুর খুব আদরের ছিলাম বলে তিনিও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চাপ দেননি। নিজেই চয়েজ করে নিয়েছিলাম ভর্তির সিদ্ধান্ত। মোটকথা, এমসি কলেজ ছাত্রদলের সবার সাথে দৈনন্দিন দেখা হওয়ায় তাদের সাথে ভালো বুঝাপড়া করে যেত। সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাথে জড়িত হলে এমসি কলেজ ছাত্রদলের বড় ভাইদের সান্নিধ্যে অনায়াসে আসে যায়। ক্যাম্পাস রাজনীতির অবস্থা এমন ছিলো, প্রতিদিন সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে এমসি ক্যাম্পাসে গিয়ে বড় ভাইদের সাথে রাজনৈতিক বিভিন্ন প্রোগ্রাম মিলিত হয়ে করার ফলে তাদের খুব প্রিয় হয়ে গিয়েছিলা। এইদিক দিয়ে বলতে গেলে কলেজের নাম দুটি হলেও সবকিছু ছিলো একই সুঁতায় গাঁথা। যারা করেছে একমাত্র তারাই বলতে পারবে অগ্রজ এবং অনুজদের মধ্যে সম্পর্ক কেমন ছিলো। দুই কলেজের অগ্রজ এবং অনুজদের  মধ্যে শ্রদ্ধা, স্নেহের কোনো অংশে কমতি নাই। যাই হোক এমসি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর এই ক্যাম্পাসকে নিজের সেকেন্ড হোম বলে মেনে নিতেও কুণ্ঠিত হইনি। আগের থেকে আরও বেশি সময় দিয়ে কলেজ রাজনীতিতে নিজেকে সক্রিয় করে নেই। যার জন্য ২০১২ থেকে আজ পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতির সাথে যুক্ত ছাত্রদল, ছাত্রলীগ এমনকি অন্য সকল সংগঠনের সবাইকে চিনতে অসুবিধা হয়নি। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি বিতর্কতি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী দলের প্রত্যাখ্যানের পরও ছাত্রদলের ক্যাম্পাসে অবস্থান ছিলো চোখে পড়ার মতো। ২০১৫ সালে ৫ই জানুয়ারি বিতর্কতি নির্বাচনের প্রথম বর্ষের দিন থেকে আন্দোলন শুরু হলে এমসি কলেজ ছাত্রদলের অবস্থান কোনো অংশে কম ছিলো না। দীর্ঘদিন আন্দোলন হওয়ার ফলে কলেজ ছাত্রদলের অবস্থান আস্তে আস্তে নিস্ক্রিয় হয়ে যায়। ক্যাম্পাসে ছাত্রদল অনিয়মিত হলেও কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসা যাওয়ার কমতি রাখিনি। প্রমাণ স্বরূপ অন্য সকল সংগঠনের কাছে জিজ্ঞেস করলে জানতে পারবেন। প্রত্যেক ছাত্রদল কর্মীদের সবসময় আগলে রেখেছি যতটা সম্ভব, আর প্রিয় অগ্রজরাও হেল্প করছিলো যথেষ্ট। যার জন্য তাদের সাথে সবসময় কথা এবং দেখা হতো। সিনিয়র এবং জুনিয়র ভাইয়েরাও কলেজ ছাত্রদলের সাথে জড়িত সবাই সবার সাথে পরিচিত। ২০১৭ সালে মহানগর ছাত্রদলের সফল সভাপতি নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ ভাই, সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ লোকমান ভাই ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেন।
১. আহবায়ক: বদরুল আজাদ রানা ভাই,
২. সদস্য সচিব: দেলওয়ার হোসেইন ভাই,
৩. ১নং সদস্য: রুবেল ইসলাম ভাই
কলেজের নতুন আহবায়ক কমিটি অনুমোদনের পর প্রিয় অগ্রজ এবং অনুজদের মিলনমেলায় মেতে উঠে ছাত্রনেতারা। ১ যুগের পর কলেজ ছাত্রদলের কমিটি হলে ছাত্রদল সাপোর্ট করা নেতৃবৃন্দরাও সক্রিয় হয়। এতে করে কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে অনেকগুলো অনেকগুলো প্রোগ্রাম এবং বৈঠক হয়। যার ফলে কলেজ রাজনীতির সাথে যুক্ত কেউ কারও অপরিচিত নই। এর জন্য খালেদ ভাই এবং লোকমান ভাইকে অনেকবার দেওয়া হয়েছিলো অভিনন্দন।  সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ছাত্রদলের কর্মীগণও সভাপতি ও সম্পাদককে সফল জুটি হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলো। অবশেষ গেল ১৮ই জানুয়ারি এমসি কলেজ ছাত্রদলের ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করেন মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি -সম্পাদক দ্বয়। কমিটি গঠনের পর থেকে যেন স্তব্দ সকল ছাত্রনেতারা। একে অন্যকে প্রশ্ন করেই যাচ্ছেন! বিশেষ করে সাবেক ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষণীয়। সিলেট ছাত্রদলের আতুরঘর খ্যাত এমসি কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠনে আপনাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করবো না! প্রশ্ন শুধুমাত্র নিজের কাছে? কমিটিতে আমার অবস্থান নিয়ে নিজে কিছু বলবো না।। আপনারা (সাবেক) নিশ্চয় আমার সমালোচনা কিংবা আলোচনা করার অধিকার রাখেন। তাই আপনাদের / তোমাদের কাছে অনুরোধ আপনারা/তোমরা কমিটি নিয়ে আমাকে কিছু বললে কৃতার্থ হবো। কারণ আপনাদের সদুপদেশ আমার জন্য ভবিষ্যত পথচলার অনুপ্রেরণা। ভুল-ভ্রান্তি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে

(ফেসবুক লিংকঃ https://www.facebook.com/selim.ahmed.549668)