বিশ্বনাথে গোলাগুলিতে নিহত অজ্ঞাতনামার পরিচয় মিলেছে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেটের বিশ্বনাথে পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে নিহত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত ওই ব্যক্তি হলেন বিশ্বনাথ থানার পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত ইদ্রিছ আলীর পুত্র তরাজ মিয়া।

এদিকে নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শনিবার বেলা ৩টার দিকে তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় তার স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের বিলাপ করতে দেখা যায়। পুলিশের দাবি, তরাজ ডাকাত দলের সদস্য।

পুলিশ বলেছে, শুক্রবার রাত ৩টার দিকে উপজেলা সদরের বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর বাইপাস সড়কের মরমপুর-সুরিরখাল এলাকার মধ্যবর্তী জায়গায় সড়কের পার্শ্বের গাছ কেটে ডাকাতির প্রস্তুত নিচ্ছিল অস্ত্রধারী একটি ডাকাত দল।

নিয়মিত টহলের অংশ হিসেবে শুক্রবার দিবাগত ভোররাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে থানার এসআই মিজানুর রহমান তার সঙ্গীয় কনস্টেবল চন্দন গৌর ও রাসেল দাসকে নিয়ে এলাকা টহল দিচ্ছিলেন।

পুলিশের গাড়ি দেখতে পেয়ে ডাকাত দল পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করতে শুরু করে। এতে পুলিশ সদস্যরা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।

পুলিশ বলেছে, খবর পেয়ে থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা, পরিদর্শক (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী, এসআই নূর হোসেন, দেবাশীষ শর্ম্মা নিজের ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পুলিশের উপস্থিতি বাড়ছে টের পেয়ে ডাকাতদল দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় পুলিশও পাল্টা গুলি করে।

এরপর স্থানীয় লোকজনকে সাথে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল তল্লাশি করলে স্তুপ করা মাটির উপর এক ডাকাত সদস্যের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় ওই ডাকাত সদস্যের হাতে একটি দেশীয় পাইপগান ও কোমরে থাকা ৩টি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করে।

বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, ডাকাতিসহ সকল প্রকার অপরাধ দমনে থানা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

নিহতের স্ত্রীর অভিযোগ ভিন্ন
সিলেটের বিশ্বনাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত তরাজ মিয়ার স্ত্রী হালিমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ২২ মাস পর গত ১৮ ফেব্রæয়ারি তার স্বামী জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসেন। বের হওয়ার ৫ মিনিটের মাথায় জেলগেট থেকে সাদা পোশাকে পুলিশ তাকে আবার ধরে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

শনিবার বেলা ৩টার দিকে তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় তার স্ত্রী এ সকল অভিযোগ করেন।

হালিমা খাতুন আরও বলেন, পরে আইনজীবীর মাধ্যমে জানতে পারি ৫০ হাজার টাকা দিলে আমার স্বামীকে ছোটখাটো মামলা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরে আজ (শনিবার) সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি আমার স্বামী মারা গেছেন।

শুক্রবার রাত ৩টার দিকে বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর বাইপাস সড়কের মরমপুর-সুরিরখাল এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন তরাজ মিয়া।

তরাজের স্ত্রীর অভিযোগকে মিথ্যা ও বানোয়াট দাবি করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতিকালেই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন তরাজ মিয়া।

তিনি আরও বলেন, ডাকাতিসহ সকল প্রকার অপরাধ দমনে থানা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।