যে স্বপ্ন লালন করেন আফতাব হোসেন

 

বিশেষ প্রতিনিধি:

সিলেট নগরীর বহুল আলোচিত নাম আফতাব হোসেন খান। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে লড়াই করার কারণে তিনি তকমা পেয়েছেন সন্ত্রাসীর। এতে তিনি মোটেই ক্ষুব্ধ নন। দেশ, জাতি, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ আর নিজ দলের জন্য লড়াই করে সন্ত্রাসী খেতাব পেলে আনন্দ অনুভব করেন-এমনটা জানালেন তিনি।

জামায়াত-বিএনপির সাথে লড়াইয়ে ব্রাশ ফায়ারের শিকার হয়েছেন আফতাব হোসেন। যে ব্রাশ ফায়ারের যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে আজো। প্রতিনিয়তই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান নিজকে স্বাভাবিক রাখতে। তারপরও যন্ত্রণা তাকে কাতর করে রাখে।

যুদ্ধাপরীধের বিচার শুরু হওয়ার পরপরই আফতাব হোসেন অগ্নিমূর্তি ধারণ করেন। জামায়াত আর বিএনপির অগ্নি সন্ত্রাসের মোকাবেলা করেছেন বিভিন্ন সময়। সাঈদীর রায়ের দিন সিলেটের রাজপথকে দখলে রাখতে আফতাব হোসেন মাঠে নামেন বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে। যে পরিকল্পনার কারণে ওইদিন বিএনপি-জামায়াত সিলেটে আন্দোলন করার সাহস পায়নি। পীর মহল্লা এলাকায় জামায়াতের দুই জন শীর্ষ নেতার বাড়িতে আক্রমণ করেন আফতাব হোসেন। এই আক্রমণের কারণে সাহস হারিয়ে ফেলে বিএনপি-জামায়াত।

আফতাব হোসেন খান সিলেট মহানগড় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ও সিলেট সিটির ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। গত নির্বাচনে তিনি সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৫ সালে এই ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বার নির্বাচিত কাউন্সিলর।

কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর আফতাব হোসেন খান অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছেন নিজের ওয়ার্ডকে। এক সময় যেসব রাস্তা দিয়ে রিকশা চলাচল ছিল কষ্টসাধ্য, এখন সেসব রাস্তা দিয়ে বড় বড় যানবাহন চলাচল করে নির্বিঘ্নে। তাতে নেই কোনো দুর্ভোগ। ওয়ার্ডের পাড়া মহল্লার রাস্তায় প্রবেশ করলে মনে হবে বিশেষ পরিকল্পনায় প্রতিটি এলাকা সাজিয়ে তোলা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাতে দীর্ঘ সময় আলাপ হয় আফতাব হোসেনের সাথে। কাজের ফাকে ফাকে তিনি গভীর রাত পর্যন্ত তার রাজনীতি, ওয়ার্ডবাসীকে নিয়ে লালিত স্বপ্নের কথা জানান খোলামেলাভাবে।

আফতাব হোসেন খান বলেন, তার রাজনীতির উদ্দেশ্য দুইটি। প্রথমটি হচ্ছে সত্যের পক্ষে লড়াই করা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে অসত্যকে সমাজ থেকে নিমূর্ল করা। তিনি সফল হচ্ছেন। ওয়ার্ডবাসী তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। প্রতিটি কাজে সহযোগিতা করছেন। তিনি বলেন, তিনি যদি এলাকার উন্নয়নে কাজ করতেন না-তা হলে কেউ তাকে সমর্থন করতেন না। ভাল কাজ করেন বলেই সকলে তাকে সাপোার্ট দিচ্ছেন। আগামীতে এলাকার উন্নয়নে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

আফতাব হোসেন খান বলেন, সমাজে মারাত্মক ব্যাধি হচ্ছে মাদক। এই মাদককে তার এলাকায় ‘না‘ বলার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছেন। এ জন্য তিনি এলাকায় মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এই টুর্নামেন্টের খেলা দেখার জন্য ওয়ার্ডবাসী জড়ো হন মাঠে। এতে সব শ্রেণির মানুষ আসেন। এর সুফল পেতেও শুরু করেছেন। এলাকাটি বর্তমানে প্রায় মাদক শূন্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, এলাকায় যাতে কোনো ধরনের মাদক প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আফতাব হোসেন খান বলেন, প্রবাসীরা যাতে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেন সেজন্য তিনি বিশেষ নজরদারি করেন। ৭ নং ওয়ার্ডে কোনো প্রবাসীকে কেউ হয়রানী করলে তিনি তা কঠোর হস্তে দমন করেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা প্রভৃতিকে সাজিয়ে তুলতে তিনি বিশেষ পরিকল্পনায় কাজ করে যাচ্ছেন।

সব শেষে আফতাব হোসেন জানালেন, অন্যায়ের সাথে তিনি কখনো আপস করবেন না। রাজকার, যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে তার লড়াই অবিচল থাকবে বলে জানান।