ধর্ষণের ঘটনায় পল্টন থানার ওসি সাসপেন্ড

 

অনলাইন ডেস্ক:

প্রথমে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। পরে চাকরি না দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে নিয়ে মাসের পর মাস চলে শারীরিক সম্পর্ক। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে এবারও তাকে দেখানো হয় বিয়ের প্রলোভন। ফলে সরল বিশ্বাসে তার কথায় গর্ভপাত করান তরুণী। সব শেষে তরুণীর সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। এসব অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর পল্টন থানার ওসি মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ঐ তরুণী বিচার না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার সত্যতাও পেয়েছে পুলিশ। এরপর পুলিশ সদর দপ্তর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।

ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, তিনি একটি সরকারি কলেজ থেকে পড়ালেখা শেষ করে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এর মধ্যে ফেসবুকে ওসি মাহমুদুল হকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মাহমুদুল তাকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে নওগাঁ থেকে ঢাকায় ডেকে আনেন এবং পল্টন থানার বিপরীতে একটি হোটেলের রুমে নিয়ে যান। সেখানে হোটেল বয়কে দিয়ে তার জন্য স্যুপ আনান। তিনি খেতে না চাইলেও জোর করে খাওয়ানো হয় সেই স্যুপ। এরপর তিনি ঘুমিয়ে পড়লে মাহমুদুল তাকে ধর্ষণ করেন। পরে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক নেই জানিয়ে তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর প্রতি সপ্তাহেই তাকে ঢাকায় এনে হোটেলে রেখে শারীরিক সম্পর্ক করেন মাহমুদুল। গত বছরের অক্টোবরে অন্তঃসত্ত্বা হন তিনি। বিষয়টি তাকে জানালে বিয়ের শর্তে গর্ভপাত করান। এরপর যোগাযোগ বন্ধ করে দেন ওসি মাহমুদুল।

ঐ তরুণী আরো জানান, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে না করায় তিনি ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। পরে তরুণীর পরিবার ওসি মাহমুদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো এবং বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত ওই তরুণীর ক্ষতিরও চেষ্টা করা হয়। এসব ঘটনার পর বিচার চেয়ে ঐ তরুণী মতিঝিল জোনের এডিসি শিবলী নোমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু মীমাংসার কথা বলে শিবলী নোমান তাকে হেনস্তা করেন।

বিষয়টির তদন্ত করে মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোনালিসা বেগম তদন্ত প্রতিবেদন ডিএমপির সদর দপ্তরে পাঠান। গত ২৫ সেপ্টেম্বর সেটি পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, ওসি মাহমুদুল ২০০১ সালে এসআই পদে পুলিশে যোগ দেন। তার বাড়ি নওগাঁ জেলায়। চাকরিজীবনে তিনি একটি গুরুদণ্ডে ব্ল্যাক মার্ক এবং ২২টি লঘুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তিনি ২০১৭ সালের ২ জুলাই পল্টন থানার ওসি হিসেবে যোগ দেন। তার স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে। এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। ডিসি আনোয়ার হোসেন বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। এখন কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।