মেয়র আরিফের হালহকিককত

 

ডেস্ক রিপোর্ট:

সিলেটের বহুল আলোচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হওয়ার পর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ঢাকায় তার পরিবার পরিজন নিয়ে গিয়েছিলেন।

শপথ গ্রহণের পর মেয়র আরিফের মা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ছেলেকেও হাত ধরিয়ে বলেছিলেন, আজ থেকে সেও আপনার ছেলে। আপনিও তার মা। তখন প্রধানমন্ত্রী হেঁসে হেঁসে বলেছিলেন তার মা কয়জন। সম্ভবত খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন কথাটি।

সেই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় সিলেট থেকে বিপুল পরিমাণ বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীকেও ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কথা ছিলো শপথ গ্রহণ শেষে নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবর জেয়ারত করবেন। কিন্তু শপথ গ্রহণের পর শেখ হাসিনাকে মা সম্বোধন করার কারণে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত না করে, পালন করা হয়েছিল সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মৃতু্য বার্ষিকী।

গত ২৭ জুলাই প্রখ্যাত সাংবাদিক আবেদন খানের সাথে সিলেটের সুধি সমাজের আড্ডায়, বক্তব্য রাখার সময় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে যা চাচ্ছি তাই পাচ্ছি, কিন্তু প্রশাসনের এক শ্রেণীর কর্মকর্তারা তার দ্রুত রাজনৈতিক হতে চাচ্ছেন। তারা নগরীর উন্নয়নে অনেক ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন না। মেয়র নিজেই স্বীকার করলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে যা চাচ্ছেন তা পাচ্ছেন। । মা তো ছেলের চাওয়া পাওয়াকে পূরণ করবেনই। কিন্তু ছেলে কী করছেন?

ছেলেতো নানার মৃতু্য বার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে ফাঁকি দিয়ে চলেছেন বরাবরের মতোই। ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ৪৪ তম মৃতু্য বার্ষিকী ছিলো, রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হলো, কিন্তু শোক দিবসে সিটি করপোরেশন কর্তৃক গৃহীত অনুষ্ঠানগুলোতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ছিলেন অনুপস্থিত। রাষ্ট্রীয় অর্থসহ গাড়ি জ্বালানি তৈল মিলিয়ে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করেও রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানাধীতে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতার মৃতু্য বার্ষিকীর অনুষ্ঠান বর্জন করছেন ইচ্ছাকৃতভাবে। এ কেমন অকৃতজ্ঞতা?

জাতীয় শোক দিবস পালনের উদ্দেশ্যে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃক আয়োজিত প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২১ জুলাই। সেই প্রস্তুতিসভার কার্যবিবরণীর কোথায়ও মেয়র আরিফের উপস্থিতির নিশানা পর্যন্ত নেই।

ঈদের ছুটির শেষে গত ১৮ আগস্ট রবিবার সিটি করপোরেশনে আয়োজিত মিলাদ মাহফিলেও মেয়র ছিলেন গরহাজির। ১৫ আগস্টের কর্মসূচির দিন নাকী তিনি ছিলেন, ময়মনসিংহে শ্বশুর বাড়িতে। ১৮ আগস্ট মিলাদ মাহফিলের সময় তিনি কোথায় ছিলেন তা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারেননি। তবে সেদিন সকাল ১১ টার দিকে আরিফুল হক চৌধুরীকে আদালতে দেখা গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন অনেকে। অর্থাত তিনি সিলেট নগরেই ছিলেন। জোহরের নামাজ শেষে নয়াসড়ক এলাকায় অবস্থান করছিলেন।

সৌজনে: সাপ্তাহিক বাংলার বারুদ