জনগণের দাবি হওয়ায় হরতালে সমর্থন: ফখরুল

ডেস্ক রিপোর্ট

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম জোটের হরতালে বিএনপির সমর্থন দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, জনগণের সব দাবিকেই তারা সমর্থন দেবেন।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপি নেতা। বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

সম্প্রতি এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গ্যাসের দাম গত ৩২.৮ শতাংশ বাড়িয়েছে। আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক সব ধরনের গ্যাসেরই দাম বেড়েছে। কারণ হিসেবে সরকার বলছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা এলএনজির দামের সঙ্গে দেশি গ্যাসের দাম সমন্বয় করতে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

তবে বাম দলগুলো এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে এর প্রতিবাদে বরিবার আধাবেলা হরতালের ডাক দিয়েছে। বিএনপি নিজে থেকে কোনো কর্মসূচি না দিয়ে হরতাল নৈতিক সমর্থন দিয়েছে।

ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামীকালের হরতালকে আমরা সমর্থন করব। কারণ এটা জনগণের দাবি। জনগণের সমস্ত দাবিকে আমরা সমর্থন করব।’

অবশ্য বিএনপি এই হরতাল সফল করতে অংশ নেবে কি না- এই বিষয়ে কিছু বলেননি দলের মহাসচিব। বলেছেন, ‘গণবিরোধী ও গণতন্ত্রবিনাশী’ সরকারকে হটাতে সব দল এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করবেন তারা।

ফখরুল বলেন,‘ভয়ঙ্কর গণতন্ত্র বিনাশী সরকার মানুষের অধিকার সমূলে কেড়ে নিচ্ছে। এই সরকারকে অপসারণ করতে হলে জনগণের ঐক্যের গণঐক্যের আরও কোনও বিকল্প নেই। আজকে সেই গণঐক্য আমাদেরকে সৃষ্টি করতে হবে।’

১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা মামলার রায়েরও সমালোচনা করে ফখরুল। ঘটনার ২৫ বছর পর দেওয়া রায়ে বিএনপির নয় জনের ফাঁসি, ২৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৩ জনের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘পাবনার ঈশ্বরদীতে শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলার মামলায় যে বিচার হয়েছে কয়দিন আগে, এটা কখনও কোনও সভ্য সমাজে আইনের কোনও ইতিহাসের মধ্যে পড়ে না। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক রায় কখনও হতে পারে না। আমরা এই রায়ে হতাশ নই শুধু, বিক্ষুদ্ধও। দেশে এখন ন্যায়বিচার থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ।’

‘বিচার বিভাগ থেকে জনগণ ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’

‘বিচার বিভাগের ওপর আমাদের নির্ভর করার কথা, সাধারণ জনগণের নির্ভর করার কথা। কিন্তু এই বিচার বিভাগের কাছে আমরা কোনও বিচার পাই না। এই বিচার বিভাগ সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগ সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকার যা নির্দেশ দেয় আদালতও সেই বিচারই করে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘আজকে খালেদা জিয়ার মুক্তি আমরা চাচ্ছি এ কারণে যে, তাঁর মামলাগুলো সম্পূর্ণভাবে সাজানো। দ্বিতীয়ত, একই ধরনের মামলায় সরকারের অনুসারীদের জামিন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমাদেরকে জামিন দিচ্ছেন না। দেশনেত্রীকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। এটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।’

‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি একটা গণদাবি, সাধারণ মানুষের দাবি, দলমত নির্বিশেষে সবাই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় এবং গণতন্ত্রের মুক্তি চায়।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, মহানগর যুবদল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিবসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।