কে যাবে সেমিতে

 

স্পোর্টস ডেস্ক

একটি মাত্র জয় বদলে দিয়েছে ইংল্যান্ডকে। ক’দিন আগেও গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় থাকা ইংল্যান্ড এখন শিরোপার স্বপ্ন দেখছে! সে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততেই হবে মরগানদের। হেরে গেলে কিন্তু বিদায়ঘণ্টা বেজে যাবে স্বাগতিকদের। সেমি নিশ্চিত হয়নি কিউইদেরও। তাদেরও জয়টা ভীষণ প্রয়োজন। অবশ্য রানরেট ভালো থাকায় বড় ব্যবধানে না হারলে নিউজিল্যান্ডের সেমিতে যাওয়া আটকাবে না। অর্থাৎ, আজ ইংল্যান্ডের জয় মানে উপমহাদেশের আরও এক দলের সেমিতে খেলার সম্ভাবনার সলিল সমাধি। তাই আজ চেস্টার-লি-স্ট্রিটে অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনালে রূপ নেওয়া ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে নজর থাকবে উপমহাদেশেরও।

ইংল্যান্ডের জন্য সেমির সমীকরণটা একেবারে পরিস্কার। আট ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১০, আজ জিতলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে যাবে তারা। আর হেরে গেলে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে যাবে নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের হারে শেষ চারের পথ খুলে যাবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের। এজন্য অবশ্য ভারতের বিপক্ষে জিততে হবে বাংলাদেশকে। যদিও গতকাল এজবাস্টনে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ভারত এ রিপোর্ট লেখার সময় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। বাংলাদেশ যদি ভারতের কাছে হেরে যায় তখন সে সম্ভাবনাটা শুধু পাকিস্তানের থাকবে। সে ক্ষেত্রে ৫ জুলাই বাংলাদেশের বিপক্ষে জিততে হবে পাকিস্তানকে। আর বাংলাদেশ যদি ভারতের বিপক্ষে জিতে যায় তাহলে ৫ জুলাই লর্ডসে নকআউটে নামবে উপমহাদেশের এ দুই দল। ইংল্যান্ড জিতলেও উপমহাদেশের এই দুই দলের সুযোগ থাকবে। সে ক্ষেত্রে কিউইদের হারের ব্যবধানটা অনেক বড় হতে হবে। আর ৫ জুলাই যারা জিতবে তাদের জয়টাও অনেক বড় হতে হবে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আজকের দুই প্রতিপক্ষে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনাল ভাগ্য তাদের নিজেদের হাতে আছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো অন্যের পানে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে না তাদের।

ভারতের বিপক্ষে জয়টাই বদলে দিয়েছে ইংলিশদের। আগ্রাসী ব্যাটিং ও স্মার্ট বোলিংয়ে তারা ভারতকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। ওপেনার জেসন রয় ফেরাতেই তাদের ব্যাটিংয়ের চেহারাটা পাল্টে গেছে। জনি বেয়ারস্টোও ফর্মে ফিরে এসেছেন। আগের দুই ম্যাচে রয়ের অভাবে বেশ ভুগেছে ইংল্যান্ডের ওপেনিং। যে প্রভাব পুরো ব্যাটিং লাইনের ওপর পড়েছে। ভারতের ম্যাচের মতো আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও জ্বলে উঠতে হবে ইংলিশ ওপেনারদের। রুট, মরগান, স্টোকসকেও রান করতে হবে।

প্রথম ছয় ম্যাচ অপরাজিত থাকা নিউজিল্যান্ড কিন্তু হারের বৃত্তে আছে। গত দুই ম্যাচ পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছে তারা। দুটি ম্যাচেই কিউই বোলাররা চমৎকার পারফর্ম করলেও ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠতে পারেননি। নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হলো ওপেনিং নিয়ে। এবারের বিশ্বকাপে এখনও কোনো ম্যাচে বড় ওপেনিং জুটি গড়তে পারেনি কিউইরা। যে কারণে শুরুতেই ব্যাটিংয়ে আসতে হচ্ছে কেন উইলিয়ামসনকে। তিনি পারফর্মও করছেন। কিন্তু যেদিন তিনি ব্যর্থ হচ্ছে সেদিন কিউইদের পুরো ব্যাটিংই মুখ থুবড়ে পড়ছে। তাই আজ কিউই ওপেনারদের বড় রান করতে হবে। মিডল অর্ডারের অন্যদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।

তবে ইংল্যান্ড জয়ের ব্যাপারে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। সেটা ফুটে উঠেছে ইংলিশ অলরাউন্ডার ক্রিস ওকসের কণ্ঠে, ‘এত চাপ মাথায় নিয়ে ভারতের মতো দলকে হারানোটা দারুণ ব্যাপার। এই জয়টা মানসিকভাবে আমাদের অনেক এগিয়ে দিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের এখন নকআউট খেলতে হবে। অবশ্যই আমরা জিতব এবং সেমিতে খেলব।’ কিউইরা কিন্তু এতটা আত্মবিশ্বাসী নয়। তাদের ব্যাটিং কোচ ক্রেইগ ম্যাকমিলান বলেন, ‘আমরা এখনও সঠিক পথেই আছি। এভাবে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলাটা দারুণ ব্যাপার।’

আজ ডারহামে চমৎকার রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করবে। বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। আকাশও পরিস্কার থাকবে। এখানে গত চার ম্যাচের তিনটি জিতেছে পরে ব্যাট করা দল। তবে গত পরশু শ্রীলংকা আগে ব্যাট করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়ী হয়েছে।