কানাইঘাটে ভালবাসায় সিক্ত জাপা নেতা জাকির

কানাইঘাট প্রতিনিধি:

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য, যুক্তরাজ্য প্রবাসী কমিউনিটি নেতা সেখানকার বিশিষ্ট শিল্পপতি এম.জাকির হোসেনকে কানাইঘাটে পথে পথে গণ সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার কানাইঘাট উপজেলা ও পৌর যুব সংহতির উদ্যোগে এম.জাকির হোসেনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পূর্ব নির্ধারিত বিকেল ৪টার কানাইঘাট উত্তরবাজারে সভাস্থলে পাল্টা উপজেলা যুব সংহতির একাংশের ব্যানারে একই জায়গায় ঈদ পূর্ণমিলনী সভার ঘোষণা দিলে থানা পুলিশ শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নির্ধারিত স্থানে কোনো পক্ষকে নির্দিষ্ট সময়ে সভা করতে দেয়নি। মঞ্চের স্থান ঘিরে রাখে পুলিশ। এ নিয়ে জাপা ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলা ও পৌর যুবসংহতির উদ্যোগে নির্দিষ্ট সভাস্থলে এম.জাকির হোসেনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ সময় দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা সেখানে জড়ো হন। যুবসংসতি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে রাত ৮টায় কানাইঘাট বাজার ত্রিমোহণী পয়েন্টে পৃথক আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন এম.জাকির হোসেন। এছাড়া এম.জাকির হোসেনকে উপজেলা পরিষদ সম্মুখ প্রাঙ্গনে বিকেল সাড়ে ৫টায়, চতুল বাজার, চতুল ঈদগাহ বাজারে জাপা ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা গণ সংবর্ধনা দেন।

পৃথক এসব সভা-সমাবেশে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে সংবর্ধিত অতিথি যুক্তরাজ্যের শিল্প উদ্যেক্তা জাপার কেন্দ্রীয় নেতা এম.জাকির হোসেন বলেন, জন্মভূমি কানাইঘাট ও জকিগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ ও জাপার নেতাকর্মীরা আমাকে যে সম্মান দেখিয়ে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে নিয়েছেন যা আমি কখনও ভুলবনা। জীবন দিয়ে হলেও মানুষের এ ভালোবাসার প্রতিদান আমি দিতে চাই।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেন, আমি কি অপরাধ করেছি আমি এমপি হব, জনপ্রতিনিধি হব এধরনের ঘোষণা না দেওয়ার পরও আজ আমার কানাইঘাট বাজারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বানচাল করার জন্য সভাস্থলে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় পাল্টা সভা কারা ডেকেছে তা এ অঞ্চলের মানুষ ও জাপার নেতাকর্মীরা জানেন।

ষড়যন্ত্রকারীরা বাঁধা দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বন্ধ করতে পারেনি। জাপা ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী ও শান্তিপ্রিয় কানাইঘাটবাসী পথে পথে আমাকে বিপূলভাবে সংবর্ধিত করেছেন। এ ভালোবাসার প্রতিদান আমি দিতে চাই।

02
তিনি আরো বলেন, জাপার চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি আলহাজ হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন এলাকার মানুষের পাশে থেকে পার্টিকে সুসংগঠিত করার জন্য। সেই লক্ষে আমি তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে-ময়দানে কাজ করে যাচ্ছি। যা দলের ভিতরে বিবেদ সৃষ্টিকারীরা মেনে নিতে পারছেনা। দলের চেয়ারম্যান সিলেট-৫ আসনে আমাকে পার্টির মনোনয়ন দিলে অবহেলিত কানাইঘাট জকিগঞ্জের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত করব ইনশাআল্লাহ। সরকারের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের সহযোগিতায় উন্নয়নের স্বর্ণশিখরে এ জনপদকে নিয়ে যাব। তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের যে কোনো ধরনের চক্রান্তের জবাব দিতে জাপার নেতাকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান।

উপজেলা যুবসংহতির আহ্বায়ক মানিক উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাবেক সভাপতি আলমাছ উদ্দিন ও পৌর শাখার আহ্বায়ক জুবেল আমিনের যৌথ পরিচালনায় পৃথক এসব সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় যুব সংহতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা যুবসংহতির সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা আহমদ চৌধুরী, যুবসংহতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ ঈসমাইল আলী আশিক, কেন্দ্রীয় যুব সংহতি নেতা জেলা পরিষদ সদস্য মো.আশিক মিয়া, যুক্তরাজ্য টাওয়ার হেমলেটসএর সাবেক কাউন্সিলর কমিউনিটি নেতা মায়ূম মিয়া তালুকদার, শাহরিয়ার চৌধুরী, সিলেট মহানগর জাপার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেলু মিয়া।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপজেলা জাপা ও সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাপা নেতা আব্দুল হান্নান লালপীর, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, ফখরুল ইসলাম, নজির উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, রফিক আহমদ, উপজেলা যুুবসংহতির সদস্য সচিব শরীফ উদ্দিন মেম্বার, যুগ্ম আহ্বায়ক আজমল হোসেন, পৌর সদ্যস সচিব সন্দিপ দাস।

অনুষ্ঠান শেষে এম জাকির হোসেন রাত সাড়ে ৯টায় কানাইঘাট প্রেসক্লাব মিলনায়নে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি প্রেসক্লাবের উন্নয়নে ১লক্ষ টাকার অনুদান ঘোষণা করেন। এসময় দলের নেতাকর্মীরা তার সাথে উপস্থিত ছিলেন ।

বিকেল সাড়ে ৩ টায় জাপা নেতা এম জাকির হোসেইন কানাইঘাট প্রবেশের পরপরই প্রথমে বড়চতুল বাজারে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর পর রাত ১০ টা পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হয় চতুল ঈদগাহ বাজার, উপজেলা পরিষদের সামনে, মসজিদ ও বাজার কমিটির সংবর্ধনা, ত্রিমুখি পয়েন্টে, ঘাটের বাজারে ও অটোরিকশা সিএনজি শ্রমিকদের সংবর্ধনা।

আল্লামা মোশাহিদ বায়মপুরির রওজা জিয়ারত করেন বিপুল নেতাকর্মী নিয়ে। এতে মুনাজাত পরিচালনা করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল্লামা আলিমুদ্দিন দুর্লভপুরি। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য আশিক মিয়া, সাবেক ছাত্রনেতা মুজিবুর রহমান ডালিম, জেলা যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক মর্তুজ আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।