নগরীতে ছাত্রদলের দু’পক্ষের গোলাগুলিতে নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সিলেট নগরীর কুমারপাড়ায় ছাত্রদলের দু’পক্ষের গোলাগুলিতে ফয়জুল হক রাজু নামে এক ছাত্রদল নেতা নিহত হয়েছেন। নিহত রাজু সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-প্রচার সম্পাদক।

শনিবার (১১ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আরিফুল হকের বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রাজু নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা ফজর আলীর ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। রাজু এমসি কলেজ ও সিলেট ল কলেজের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, রাত সাড়ে নয়টার সময় আরিফুল হককে ফুল দিয়ে ছাত্রদলের একটি পক্ষ বাসা থেকে বের হয়ে কুমারপাড়ার মোড়ে দাঁড়ায়। এ সময় অতর্কিতে আরেক পক্ষ তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা তিনজনকে ধাওয়া দিয়ে ধরে কোপায়। পরে গুলি ছুড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আহত অবস্থায় তিনজন প্রায় ১০ মিনিট রাস্তায় পড়েছিলেন। খবর পেয়ে তাঁদের সঙ্গে থাকা কর্মী ও পুলিশ আহত তিনজনকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতদের মধ্যে ফয়জুল হক রাজুর অবস্থা ছিল গুরুতর। আহত অন্য দুজন হলেন উজ্জ্বল (২৮) ও সালাহ লিটন (২৮)। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজুর মৃত্যু হয়।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ পরিচালক ডা. দেবপদ রায় রাজুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, সংঘর্ষে রাজুসহ তিনজন আহত হন। রাজুকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পর রাত সোয়া ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা গিয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

ছাত্রদল সূত্র জানায়, গত ১৩ জুন রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আকরামুল হাসান স্বাক্ষরিত কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়। এতে ২৮ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটির আলতাফ হোসেন সুমন সভাপতি ও দেলোয়ার হোসেন দিনার সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন। ২৯ সদস্যবিশিষ্ট নগর ছাত্রদলের কমিটিতে সুদীপ জ্যোতি এষ সভাপতি ও ফজলে রাব্বী আহসান সাধারণ সম্পাদক।

এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করে জেলা ও নগর ছাত্রদলের একটি পক্ষ মিছিল ও সভা করে। কমিটি প্রত্যাখ্যানকারীদের অভিযোগ ছিল, ঘোষিত কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়া কেউ-ই ছাত্র নন। এ নিয়ে দুই পক্ষকে সিটি নির্বাচন পর্যন্ত শান্ত থাকতে বলেছিল কেন্দ্র।

হামলার শিকার হওয়া পক্ষের সঙ্গে থাকা নগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল হোসেন বলেন, ছাত্রদলের পদবঞ্চিত পক্ষটি নির্বাচনে আরিফুল হকের পক্ষে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল। এ ক্ষোভ থেকে হামলা হয়।

সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাহবুবুল হক চৌধুরী জানান, হামলায় আহত তিনজনই ছাত্রদলের বিদ্রোহী পক্ষের বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। হামলাকারীরা নতুন কমিটির পক্ষের।

এ ব্যাপারে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে বিজয়ী ঘোষণার পর বিজয় মিছিল হয়। সেই মিছিল আমার বাসায় গিয়ে শেষ হয়। সেখান থেকে আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের বিদায় করতে একটি হোটেলে যাই। কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যানকে নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে মিটিংয়ে ছিলাম। এ সময় ঘটনাটি ঘটেছে।’