কমলগঞ্জে জামায়াত নেতার মসজিদ নির্মাণে স্থানীয়দের বাঁধা

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি গ্রামে দুইটি মসজিদ থাকার পরও জামায়াতে ইসলামী নেতার উদ্যোগে নতুন মসজিদ স্থাপন নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

এলাকাবাসীর আপত্তি উপেক্ষা করে জামায়াতে ইসলামী নেতার মসজিদ নির্মাণে এলাকাবাসীর পক্ষে মৌলভীাবাজার পুলিশ সুপার, কমলগঞ্জ থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৪ জুন) কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল এলাকার এএসপি সার্কেল সরেজমিন পরিদর্শন করে মসজিদ নির্মাণের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত আব্দুল মছব্বির মসজিদ নির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে তাদের পারিবারিক উদ্যোগে নির্মাণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন।

এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি গ্রামের দক্ষিণাংশে ও উত্তরাংশে পৃথক দুইটি মসজিদ রয়েছে। মসজিদদ্বয়ের দুই পাশের মুসল্লিরা নিয়মিত নামাজ আদায় করে আসছেন। সম্প্রতি জামায়াতে ইসলাম ও ছাত্রশিবির নেতা আব্দুল মছব্বির তার নিজ বাড়ির সম্মুখে জামায়াত শিবির এর কতিপয় লোকজনকে নিয়ে একটি নতুন মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। তাতে এলাকার ছুন্নী মুসলমান বাঁধা প্রদান করলেও এলাকাবাসীর বাঁধা উপেক্ষা করে মসজিদের কাজ চালিয়ে যান। ফলে এলাকার মুসলমান সর্বসাধারণের মধ্যে মারাত্মক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ফলে যেকোনো সময় সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আব্দুল মছব্বির জামায়াতে ইসলামী শমশেরনগর আঞ্চলিক শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সে সুযোগে বিভিন্ন সময়ে জামায়াত শিবিরের লোকেরা তার বাড়িতে নিয়মিত আসা যাওয়া করেন এবং বিভিন্ন ঘরোয়া বৈঠক করেন। কয়েকদিন আগেও ঐ নেতার বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর ইফতার পার্টিও অনুষ্ঠিত হয়। জমসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে তিনি এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পায়তারা করছেন। কেছুলুটি গ্রামের দুরুদ আলী, সফিক মিয়া, সুফি মিয়া সহ গ্রামবাসীরা বলেন, দুইটি মসজিদ থাকার পরও জামায়াতে ইসলামীর নেতা নতুন মসজিদ নির্মাণের নামে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা সৃষ্টি করছেন। এজন্য কমলগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দপ্তরে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ বিষয়ে আব্দুল মছব্বির বলেন, একান্ত পারিবারিক উদ্যোগে মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। আমার ভাইয়েরা টাকা দিয়ে এই মসজিদ নির্মাণ করছেন। এখানে মসজিদ নির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর সাথে কোন সম্পৃক্ততা নেই। আমার বিরুদ্ধে এটি একটি অহেতুক ও হয়রানিমুলক অভিযোগ। কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোকতাদির হোসেন পিপিএম অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শমশেরনগর ফাঁড়ির আইসিকে বিষয়টি তদন্তের জন্য বলেছি। কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত মৌলভীবাজারের এএসপি সার্কেল মো. আশফাকুজ্জামান সরেজমিন পরিদর্শনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মসজিদ নির্মাণের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ ও এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে দু’পক্ষের বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর পরবর্তী কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।