‘কুচক্রিমহলের রোষানলে পড়ে আমার বাবা হত্যা মামলার আসামি’

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোয়াইন গ্রামের নুরুল ইসলাম হত্যাকাÐের সাথে ইউপি সদস্য আতাউর রহমান আতাই মিয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন তার ছেলে নুর হোসেন এ্যাপলু।

রবিবার বেলা ২টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন তিনি। নুর হোসেন এ্যাপলুর দাবি, ‘কুচক্রিমহলের রোষানলে পড়ে আতাউর রহমান আতাই মিয়া হত্যা মামলার আসামি হয়েছেন।’ আতাউর রহমান আতাই মিয়ার বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থানার নয়াবস্তী গ্রামে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নুর হোসেন এ্যাপলু বলেন, ‘আমার বাবা আতাউর রহমান আতাই মিয়া গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্বজাফলং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য। তিনি একজন স্বনামধন্য পাথর ব্যবসায়ী। আমার বাবা একজন সৎ ব্যবসায়ী, একজন জননন্দিত জনপ্রতিনিধি। তাই এলাকায় তার নির্বাচনী ও ব্যবসায়িক প্রতিদ্ব›িদ্ব রয়েছে। এলাকায় জনপ্রিয় হওয়ার কারণে আমার বাবাকে অসাধু ব্যবসায়ী চক্র ও স্বার্থান্বেষী মহলের চক্ষুশূল হয়ে থাকতে হচ্ছে। সুযোগ পেলেই প্রতিদ্ব›িদ্ব কুচক্রিরা তাকে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্থ করতে দ্বিধাবোধ করে না। প্রতিহিংসাপরায়ণ এ কুচক্রিমহলের রোষানলে পড়ে জনপ্রতিনিধি হয়েও আমার বাবাকে হত্যা মামলার আসামি হতে হয়েছে। বাবা আসামি হওয়ায় আমরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি, এলাকার মানুষও কাঙ্খিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’

গোয়াইনঘাট থানায় আইনশৃঙ্খলার ‘চরম অবনতি ঘটেছে’ এবং একের পর এক ‘হত্যাকাÐ সংঘটিত হচ্ছে’ উল্লেখ করে নুর হোসেন এ্যাপলু বলেন, ‘ঘন ঘন হত্যাকাÐকে পুঁজি করে পুলিশের মামলা ও গ্রেফতার বাণিজ্যের পাশাপাশি স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র ও জনহয়রানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। গোয়াইনঘাট থানার লাবু গোচারণ ভূমিতে গত ১১ মে দুই গ্রামের মধ্যকার ফুটবল খেলা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ বিরোধের জেরে ১৫ মে সন্ধ্যায় গোয়াইন গ্রামের নূরুল ইসলাম (২৩) নামের এক যুবক খুন হন। এ ঘটনায় কুচক্রিমহল মায়াকান্না নিয়ে এগিয়ে আসে তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থে। তারা নিহতের স্বজন ও থানা পুলিশকে প্রভাবিত করে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে ফেলে। তারা খেলা নয় পূর্ববিরোধের জের ধরে হত্যাকাÐ ঘটেছে উল্লেখ করে ৩২ জনকে এজাহারভুক্ত করে হত্যা মামলা দায়ের করায়। নিহতের বড়ভাই ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৭ মে গোয়াইনঘাট থানায় ৯২(৫)১৮নং মামলা দায়ের করেন।’

নুর হোসেন এ্যাপলু দাবি করেন, ‘নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় যাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে, সেই ব্যবসায়ী গোলাম সারওয়ার ঘটনার দিন ও সময়ে সৌদিতে ওমরাহ পালনে ছিলেন। এই গোলাম সারওয়ারের সাথে তাদের (নুর) কোনো সম্পর্ক নেই। মামলার দ্বিতীয় আসামি আমার বাবা আতাউ রহমান আতাই মিয়া এবং ১৯নং আসামি আমার চাচা পাথর ব্যবসায়ী মাতাবুর রহমান মাতাই খুনের ঘটনার মূল কারণ ফুটবল খেলার সাথে আদৌ সংশ্লিষ্ট নন। ফুটবল খেলা নিয়ে যে গ্রামের মধ্যে দ্ব›দ্ব হয়, আমরা সেই গ্রামের বাসিন্দাও নই। অন্য ইউনিয়নের বাসিন্দা হয়েও কুচক্রিমহলের ইন্ধনে, প্ররোচনায়, তদবির ও অর্থায়নে আমার বাবা ও চাচা আসামি হয়েছেন। আমাদেরকে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে অবৈধ ফায়দা হাসিলের নিমিত্তে তাদেরকে আসামি করা হয়েছে।’

নুরুল ইসলামের ‘প্রকৃত খুনিদের’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান উল্লেখ করে নুর হোসেন এ্যাপলু বলেন, ‘হত্যাকাÐকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে নিরপরাধ ও সম্মানী ব্যক্তিদের হয়রানি কারোরই কাম্য নয়।’ আতাউর রহমান আতাই মিয়া, মাতাবুর রহমান মাতাইসহ সকল ‘নিরপরাধ’ ব্যক্তিকে মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের দাবি জানান নুর হোসেন এ্যাপলু।

সংবাদ সম্মেলনে আতাউর রহমান আতাই মিয়ার আরেক ছেলে সুজেল আহমদ উপস্থিত ছিলেন।