নবীগঞ্জে লন্ডন প্রবাসীর মা ও স্ত্রীর খুনের সংবাদ যেভাবে প্রচার হয়

 

এম,এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ:

নবীগঞ্জে বউ-শাশুড়ি নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। নিহতরা হচ্ছেন উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের সাদুল্লাপুর গ্রামে মৃত রাজা মিয়ার স্ত্রী মালা বেগম (৫০) ও তার পুত্রবধূ রুমি বেগম (২২)। নিহত রুমি ওই বাড়ির লন্ডন প্রবাসী আকলাক চৌধুরীর স্ত্রী। রোববার রাত ১১ টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন ধারণা করছেন। তবে নিহতের স্বজনরা ধারনা করছেন কোনো ডাকাতদল এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, মৃত রাজা মিয়ার পুত্র আকলাক মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ লন্ডনে বসবাস করছেন। গত ২ বছর পূর্বে একই গ্রামের ডাঃ নজরুল ইসলামের ছোট বোন রুমি বেগমকে বিয়ে করেন আকলাক। বিয়ের পর থেকে বাড়িতে শুধু মা মালা বেগম ও স্ত্রী রুমি বেগম থাকতেন। দিনের বেলায়ও ঘরের কেছি গেইটে তালা লাগানো থাকতো।

রোববার রাত ১১ টার দিকে হঠাৎ ‘আগুন আগুন’ বলে ওই গ্রামে চিকিৎকার শুরু হলে গ্রামের মানুষ ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে দেখতে পান লন্ডন প্রবাসী আকলাক মিয়ার বাড়িতে রক্তাক্ত লাশ পরে আছে। স্থানীয় লোকজন ওই বাড়িতে গিয়ে ঘরের বাহির থেকে গৃহবধূ রুমি বেগম ও ঘরের ভিতরে তার শাশুড়ি মালা বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে।

ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ.স.ম সামছুল ইসলাম, সার্কেল এসপি পারভেজ আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

নিহত রুমি বেগমের বড় ভাই পল্লী চিকিৎসক নজরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিনই তিনি তার বোনের বাড়ির লোকজনের খোঁজ খবর রাখতেন। ঘটনার দিন রাতে বোন রুমি মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানায় চোঁখে আঘাত পেয়েছে ঔষধ দেওয়ার জন্য। পরে বোনের পাশের বাড়ির জনৈক তালেব মিয়া রাত সাড়ে ৯ টার দিকে বোনের জন্য ঔষধ নিতে আসে। তার কাছে ঔষধ দিয়ে পাঠানোর দেড় ঘন্টার মাথায় নির্মম এ ঘটনার খবর পান।

লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্থানীয় লোক জানান, চিৎকার শুনে তারা বাড়িতে গিয়ে লাশ দু’টি দেখতে পান। এ সময় ঘরের একটি টেবিলে ৪টি চায়ের কাপও ছিল। এতে ধারনা করা হচ্ছে হত্যাকারীরা ঘটনার পূর্বেই বাড়িতে অবস্থান করছিল। তবে ঘরের কোনো মালামাল খোয়া যায়নি।

ডাকাতি করতে যেয়ে না অন্য কোনো কারণে পরিকল্পিতভাবে বউ-শ্বাশুড়ীকে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে মূখরোচক আলোচনা চলছে। ধারনা করা যাচ্ছে হত্যাকারীরা পূর্ব পরিচিত। পুলিশ ঘরের ভেতর থেকে ১টি জুতা ও ১টি হাতঘরি উদ্ধার করেছে বলে জানাগেছে। গ্রামবাসী নির্মম এই হত্যাকান্ডের সুষ্ট বিচার দাবী করছেন।
এব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি এস,এম আতাউর রহমান বলেন, খুনের ঘটনাটি নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। এখনো কোনো মোটিভ উদ্ধার হয়নি। বউ শ্বাশুড়ির খুনের ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। তবে প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরো বলেন আমরা খবর পেয়ে রাতেই লাশ দুটি উদ্ধার করে হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেছি।