কোম্পানীগঞ্জে পাথর কোয়ারিতে লাশ: প্রধান আসামি আত্মগোপনে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের পাথর কোয়ারিতে লাশ হয় শ্রমিক। মামলাও হয় এসব ঘটনায়। কিন্তু মূল অপরাধীরা থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। যেসব গর্তে পাথর চাপা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু হয় সেসব গর্তের মূল মালিকরা মামলা থেকে রেহাই পান বিশেষ ফায়দা দিয়ে। অনেক সময় এদেরকে রক্ষা করতে আসামির তালিকার নিচে নাম অন্তর্ভ‚ক্ত করা হয়। ফলে মূল অপরাধীরা রক্ষা পেয়ে যায়। এতে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে পাথর উত্তোলনের রাজত্ব অটুট রাখে। এসব অপরাধীকে রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ-এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, কোম্পানীগঞ্জের পাথের কোয়ারিগুলোতে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর তোলার অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কতিপয় পাথর ডন ওই পদ্ধতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুৃল দেখিয়ে বোমা মেশিন ব্যবহার করে রাতের আধাঁরে পাথর উত্তোলন করে থাকে। এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পাথর ডন আমির উদ্দিন। কালাইরাগের বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে তার পাথর রাজত্ব। গত কয়েক মাস ধরে তিনি বোমা মেশিন ব্যবহার করে অবাধে পাথর উত্তোলন করে আসছেন। এজন্যে পুলিশের এক কর্মকর্তাকে তিনি দিয়ে থাকেন অনৈতিক ফায়দা।

সর্বশেষ ২ ফেব্রুয়ারি আমির উদ্দিনের গর্তে পাথর চাপা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন একজন পাথর শ্রমিক। আহত হয়েছেন আরো ২ জন। এই ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে আমির উদ্দিন শুরু করেন দৌঁড়ঝাপ। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ওসিকে কয়েক ঘন্টার মধ্যে অনৈতিক ফায়দা দিয়ে নিজকে রক্ষা করার রাস্তাও তৈরি করেছিলেন। বিষয়টি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসার পর শেষ রক্ষা হয়নি আমির উদ্দিনের। পুলিশের কড়া নির্দেশে ২ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় আমির উদ্দিনকে এক নম্বর আসামি দেখিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান। মামলা রেকর্ড হওয়ার খবর আগেভাগে জানতে পেরে আমির উদ্দিনও চলে গেছেন আত্মগোপনে।
মামলায় আরো আসামি করা হয়েছে আছলাম মেম্বারের ছেলে নুরুজ্জামান মেম্বার, লুৎফুর মিয়ার ছেলে লায়েক আহমদ, শফিক মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া ও মাহফুজ মিয়ার ছেলে এরশাদ মিয়া।

প্রসঙ্গত, ২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টার দিকে উপজেলার কালাইরাগ হাজিরডানা লালপাথর এলাকায় আমির উদ্দিনের মালিকানাধীন কোয়ারিতে কাজ করার সময় মাটি ধসে পড়ে। এতে মাটির নিচে চাপা পড়ে নিহত হন নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের ফরিদ মিয়ার ছেলে পাথর শ্রমিক রুবেল আহমদ (২৬)। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।