সাংবাদিক কামরুলের উপর হামলাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক নির্বাহী কমিটির সদস্য সাংবাদিক মো. কামরুল ইসলামের উপর চিহ্নিত ছিনতাইকারী সেলিম ওরফে লন্ডনী সেলিম ও তার সহযোগীদের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সিলেটের সাংবাদিক সমাজ, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবীদ, পেশাজীবী, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন স্তরের সচেতন লোকজন।
মানববন্ধনে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে আসামীদের গ্রেফতার করতে ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। তারা বলছেন এই সময়ের মধ্যে মামলার আসামী সেলিম ওরফে লন্ডনী সেলিম ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা না হলে সিলেটের সাংবাদিক সমাজ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে নগরীর সুবিদবাজাস্থ সিলেট প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একজন সাংবাদিকের উপর ছিনতাইকারীদের হামলার ঘটনা সাধারণ নগরবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। যারা মানুষের জন্য কাজ করেন, সমাজের অপরাধ চিত্র দূর করতে কাজ করেন তাদের জীবনের নিরাপত্তা দেয়া আইনশৃংখলা বাহিনীর কাজ হলেও সাংবাদিক কামরুলের উপর হামলার ঘটনার কয়েক দিন অতিবাহিত হলেও চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। মানববন্ধনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও আইনজীবীরা। তারা বলছেন পুলিশ চাইলে অনেক জটিল ঘটনার আসামীদের কম সময়ে গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু কামরুলের হামলার ঘটনায় কাল ক্ষেপন করার পেছনে প্রশাসনের স্বচ্চতার ও আন্তরিকতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে।
মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সিলেট স্টেশন ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহিন বক্তব্যে বলেন, আইনশৃংখলা বাহিনীকে সরকার কোটি কোটি টাকা দিয়ে লালন পালন করছে। বিশেষ করে এসএমপিকে বাড়ি-গাড়ীসহ যাবতীয় সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এসএমপি কমিশনারসহ এখানে রয়েছেন বড় বড় কর্তাব্যক্তি। তাদের দায়িত্ব হচ্ছে নগরবাসীকে নিরাপত্তা দেয়া। কিন্তু সাম্প্রতিককালে আমরা লক্ষ করছি যে তারা আইনশৃংখলা পরিস্থিতি রক্ষায় পুলিশ প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি সাংবাদিক কামরুলের উপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানান।
তিনি বলেন, প্রশাসন যদি গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয় সিলেটের সাংবাদিক সমাজ নগরীর অন্যান্য শ্রেনী পেশার লোকজনকে সাথে নিয়ে কঠিন কর্মসূচী দিকে বাধ্য হবেন।
সাংবাদিক কামরুলের উপর হামলার কয়েক দিন পরেও অপরাধীদের গ্রেফতার না করায় সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল হাসার কয়েস লোদী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, যে সাংবাদিকদের আমরা মাথা নত করে সম্মান করি তাদের উপর হামলা সহ্য করা হবেনা। তিনি বলেন, আজকের এমন হামলার ঘটনায় শপথ নিতে হবে সাংবাদিকদের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে থাকতে হবে। যারা লেখনির মাধ্যমে সমাজের নানান অপরাধ তুলে ধরেন তাদের উপর হামলাকারী অপরাধীদের শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে কামরুলের মতো অন্য কাউকে যে হামলার শিকার হতে হবে না, সেই নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারিনা। তিনি আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আপনার পারেন না এমন কিছু নেই। যারা আঘাত করেছে তাদের আপনারা ভাল করেই চিনেন। সুতরাং তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করুন।
সিলেট প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি এনামুল হক জুবের বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কামরুলের উপর যে হামলা চালানো হয়েছে সেটা খুব-ই দুঃজনক। হামলাকারীদের গ্রেফতার না করলে সাংবাদিকদের আন্দোলনে নামতে হবে তিনি মন্তব্য করেন।
সিলেট প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বলেন, ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের কারনেই সাংবাদিক কামরুলের উপর হামলার ঘটনা ঘটলেও পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতার করছেনা। সাংবাদিকদের উপর বার বার হামলার ঘটনায় সাংবাদিকদের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
স্বাগত বক্তব্যে দৈনিক জালালাবাদের সহকারী সম্পাদক কবি নিজাম উদ্দিন সালেহ বলেন, শাহজালালের পূন্য ভূমিতে আজ পতিতাবৃত্তি চলছে, মা বোনদের হাত থেকে ভ্যানিটি ব্যাগ কেড়ে নিচ্ছে, মানুষ মেরে ফেলছে। এই অপকর্মের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে আমাদের এই সাংবাদিক ভাই আজ আহত হয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। আপনারা এই হামলাকারীদের ছেড়ে দিবেন নাকি? নগরবাসীর প্রতি তিনি এমন প্রশ্ন রেখে বলেন, বার বার ছাড় দেয়ার কারনেই আমাদের সমাজে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। মানুষ এই অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।
দৈনিক জালালাবাদের নির্বাহী সম্পাদক ও আবদুল কাদের তাপাদার বলেন, সাংবাদিকদের কাজ হলো লেখনির মাধ্যমে সমাজের অপরাধ চিত্র তুলে ধরা, মানুষের কল্যাণে কাজ করা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলন করার কথা নয়। কিন্তু প্রশাসন অপরাধীদের গ্রেফতার না করায় সাংবাদিকরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে জেনেও গ্রেফতার না করায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি অপরাধীদের গ্রেফতারে ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দেন।
সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সিলেটের ডাকের বার্তা সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর বলেন, সংবাদ প্রকাশের কারনে একজন সাংবাদিকের উপর হামলা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। প্রশাসনের দুর্বলতার কারনেই অপরাধীরা বার বার হামলার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে।
ইলেকট্রনিক মিডিয়া এসোসিয়েশন (ইমজার) এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মনজু বলেন, একজন সহকর্মীর উপর হামলা মেনে নেয়া যায়না। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান তিনি।
ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি আব্দুল বাতিন ফয়সল বলেন, সংবাদ লেখার কারনে একজন সাংবাদিকের উপর হামলায় সিলেটের সাংবাদিরা মর্মাহত। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন, এই ধরনের হামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথকে বাধাগ্রস্থ করবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি এম.এ হান্নান, সাবেক সহ সভাপতি বদরুদ্দোজা বদর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মো. রেনু, বর্তমান কোষাধ্যক্ষ শাহাব উদ্দিন শিহাব, সাবেক কোষাধ্যক্ষ আফতাব উদ্দিন, দৈনিক কাজির বাজারের বার্তা সম্পাদক শুয়েব বাসত, দৈনিক সিলেট ডটকমের সম্পাদক মুহিত চৌধুরী, দৈনিক জালালাবাদ পরিচালনা কমিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. নুরুল ইসলাম বাবুল, ম্যানেজমেন্ট কমিটির নির্বাহী পরিচালক ডা. হোসাইন আহমদ, দৈনিক সিলেট বানীর সাব এডিটর চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, সিলেটের ডাকের স্টাফ রিপোর্টার কাওছার চৌধুরী ও সাঈদ নোমান, দৈনিক ভোরের কাগজের সিলেট ব্যুারো প্রধান ফারুক আহমদ, দৈনিক জালালাবাদের সিনিয়র রিপোর্টার মো. মুহিবুর রহমান, সিলেট জেলা বারের আইনজীবী ও কবি আব্দুল মুকিত অপি, ক্রীড়া লেখক সমিতি সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মান্না চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাব সদস্য আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া, সিলেট প্রেস ক্লাবের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য শুয়াইবুল ইসলাম ও দিগেন সিংহ, সিলেট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক জাহেদুর রহমান চৌধুরী, ইমজার সাবেক কোষাধ্যক্ষ শামানন্দ শ্যামল, জেলা বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ফয়জুল হক, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়াজ মো. আজিজুল করিম, কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল হোসেন, সবুজ সিলেটের স্টাফ রিপোর্টার মারুফ হাসান ও ইদ্রিস আলী, দৈনিক জালালাবাদের স্টাফ রিপোর্টার মুনশি ইকবাল, আবু বকর সিদ্দিক, মো. শাফী চৌধুরী, মিফতা তালুকদার, আফজাল রেজাউল ইসলাম, স্টাফ ফটো সাংবাদিক হুমায়ুন কবির লিটন ও এটিএম তুরাব, দৈনিক জালালাবাদের জিএম শফিকুর রহমান, সিলেট বানীর ফটো সাংবাদিক শাহ মোহাম্মদ তানভীর, সিলেট বানীর স্টাফ রিপোর্টার এনামুল হক, সুলায়মান আল মাহমুদ, জুবের আহমদ ও মুহিন, দৈনিক জালালাবাদের গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি আব্দুল আহাদ, দক্ষিন সুরমা প্রতিনিধি ও দক্ষিন সুরমা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম ইমরান, শাল্লা প্রতিনিধি আনিসুল হক চৌধুরী মুন, বিমানবন্দন থানা প্রতিনিধি মতিউর রহমান, আমার দেশ পাঠক মেলার সিলেটের সাধারণ সম্পাদক এম জে এইচ জামিল, গেøাবাল স্যোশাল ওয়েলফেয়ার সভাপতি আলী আহসান হাবিব, কলামিষ্ট ডা. মাওলানা লোকমান হেকিম, কলামিষ্ট মুমিন আহমদ, কলামিষ্ট হাবিবুর রহমান, কলামিষ্ট মো. আব্দুল হক, দি আর্থ অব অটোগ্রাফের সম্পাদক আব্দুল কাদির জীবন, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা কুমার গনেশ পাল, হাউজিং এস্টেট ইয়ুথ এসোসিয়েশনের সভাপতি ওমর মাহবুব, রুমেল চৌধুরী, আলমগীর হোসেন, আরিফুর রহমান, কামরুজ্জামান, জয় পাল, জুনেদ আহমদ, বাবলু মিয়া, খাইরুল ইসলাম, সিলেট নিউজ বিডির সম্পাদক আশরাফুর রহমান, ইমাম হোসাইন, দৈনিক জালালাবাদের সার্কুলেশন ম্যানেজার রশীদ আহমদ, অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন, প্রমুখ।