‘বোরকা পরে বাংলাদেশ থেকে এসেছি’ বিজেপি এমপির টুইটে তোলপাড় ভারত

KOLKATA, INDIA APRIL 9: (L- R) Actress Rupa Ganguly with Rahul Sinha, BJP State president (white kurta) during a releases of BJP Manifesto for forth coming Kolkata corporation election, on April 9, 2015 in Kolkata, India. (Photo by Indranil Bhoumik/Mint via Getty Images)

 

ডেস্ক রিপোর্ট:

ভারতে লোকসভার পর রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) পাশ হওয়ার পর একটি টুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী ও বিজেপি সাংসদ রূপা গাঙ্গুলী।

তার সেই টুইট ইতিমধ্যে ভারতে ঝড় তুলেছে। এ নিয়ে তর্কে-বিতর্কে মেতে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের রাজনৈতিক নেতারা।

চল্লিশ বছর আগে বোরকা পরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গিয়েছিলেন রূপা গাঙ্গুলী। সে হিসেবে তিনি অনুপ্রবেশকারী। তাহলে ভারতে রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) অনুযায়ী তার নাগরিকত্ব কি থাকবে?

নিজেই এমন প্রশ্ন ছুড়েছেন এই বিজেপি সাংসদ।

রূপার এমন টুইটে অনেক ভারতীয় প্রশ্ন তুলেছেন, তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-এর আওতায় রূপা গাঙ্গুলীকে কি এখন শরণার্থী ধরা হবে? তাকে কি এখন নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে?

কেউ কেউ বলেছেন, তাকে যদি এখন ভারতীয় নাগরিক বলে বিবেচনা না করা হয় তবে তিনি কি করে সংসদ সদস্য হয়ে বিধানসভায় থাকতে পারেন? তিনি তো নাগরিকই নন।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (সিএবি) পাশ হওয়ার পর রূপা টুইট করেন, ‘আমি তো খান টাইগারের বেগম হয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে অপহরণ করতে এসেছিল তারা। সে রাতে যদি আমি এবং আমার মা বোরকা পরে বাংলাদেশের দিনাজপুর থেকে পালাতে না পারতাম, তবে আজ বিজেপির সাংসদ হতে পারতাম না।’

রূপার এমন টুইটের পরপরই ভারতে শুরু হয় নতুন বিতর্ক। একজন অনুপ্রবেশকারীকে কিভাবে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনীত করে বিজেপি সে প্রশ্নে এখন উত্তাল ভারত।

এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘রূপা গাঙ্গুলী নিজেই বলছেন, উনি বাংলাদেশ থেকে বোরকা পরে এসেছেন। সে বিচারে উনি নাগরিক নন, একজন অনুপ্রবেশকারী। সেটা হলে বিজেপি তাকে সংসদ সদস্য করল কী করে?

এখনই রূপা গাঙ্গুলীর ইস্তফা দেয়া উচিত বলে মনে করেন ফিরহাদ হাকিম।

জবাব এসেছে বিজেপি থেকেও।

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রূপা শরণার্থী হয়ে থাকলে আগামীকালই নাগরিকত্বের আবেদন করে ভারতের নাগরিক হতে পারবেন। এ নিয়ে জল ঘোলা করার কিছু নেই।’

রূপাই প্রথম নন; শরণার্থী অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গ, আসামসহ অনেক রাজ্য থেকেই অনেকে সাংসদ হয়েছেন বলে দাবি করেন দিলীপ ঘোষ।

এদিকে দিলীপ ঘোষের এমন জবাবে তার দিকে এক ঝাঁক প্রশ্নের তীর ছুড়েছেন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা।

তারা বলছেন, ‘অ-নাগরিক’ সাংসদদের নিয়ে গঠিত সরকার কি বৈধ? রূপার মতো বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশকারীরা কি শরণার্থী হিসাবেই নাগরিকত্বের অধিকার ভোগ করছেন? এটা কি স্ববিরোধিতা নয়?

প্রসঙ্গত, রূপা গাঙ্গুলী একজন ভারতীয় অভিনেত্রী, গায়িকা ও বিজেপি দলীয় সংসদ সদস্য। কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দোপাধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ ছবিতে কপিলা চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। ২০১৫ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপি থেকে দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি৷