ভাটেরিয়ান সিলেট এর মশারি বিতরণ অনুষ্ঠান

 

ডেস্ক রিপোর্ট:

দেশে সা¤প্রতিক ডেঙ্গু রোগে সরকারি হিসেব মতে একশত জনের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে ৭৫ জন শিশু এবং ডাক্তাররাও মারা গেছেন। প্রায় ছয় বছর পূর্বে আমারও চিকনগুনিয়া হয়েছিল। এখনও মাঝে মধ্যে শরীরে ব্যথা করে। এটা খুব সহজ রোগ নয় তাই সবাইকে ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া বিষয়ে সচেতন হতে হবে। শিশু ও বাচ্চাদেরকে বিশেষ পরিচর্যা করতে হবে। এডিস মশা থেকে রক্ষা করতে মশারি টাঙ্গিয়ে বাচ্চাদেরকে ঘুম পাড়াতে হবে। গতকাল ভাটেরা ইউনিয়নে দুঃস্থদের জন্য ভাটেরিয়ান সিলেট কর্তৃক আয়োজিত মশারি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব মিকাইল সিপার একথাগুলো বলেন।

সোমবার ভাটেরা গার্লস স্কুল হলরুমে ভাটেরিয়ান সিলেট এর আহ্বায়ক মুহাম্মদ লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ইউনিয়ন পর্যায়ে এরকম সেমিনার হয়েছে বলে তাঁর জানা নেই উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ভাটেরিয়ান সিলেট ২৫০টি মশারি প্রদানের মাধ্যমে যে সেবা দিল তা দেখে আড়াই হাজার পরিবার সচেতন হবে এবং অন্য সংগঠনগুলোও এরকম কাজে উদ্বুদ্ধ হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবার পরিকল্পনা সিলেট বিভাগীয় পরিচালক মো. কুতুব উদ্দিন (যুগ্ম সচিব) বলেন, ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দাবির প্রেক্ষিতে ভাটেরা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে সাব এসিসটেন্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) হিসেবে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একজন ডাক্তার সাহেব দেব। ভাটেরিয়ান সিলেট এর আরো কল্যাণমূলক কাজ উপহার দেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ভাটেরিয়ান সিলেট মশারি বিতরণের মাধ্যমে যেটি করলো, তা সরাসরি প্রাণ বাঁচানোর জন্য উপহার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে, ভাটেরা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদ বলেন, আমি বিস্ময়ে অবাক হয়ে যাই তখনই যখন দেখি ভাটেরার ছেলেরা শিক্ষিত হয়ে শুধু নিজেদের জন্য ব্যস্ত না হয়ে সমাজ উন্নয়নে নিয়োজিত তখন মনে হয় ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজে আমার ৩০ বছরের শিক্ষকতা সার্থক হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা কর্মজীবন শেষ করে সমাজসেবার কথা চিন্তা করি, আর ভাটেরার তরুণরা তাদের তারুণ্যকে বিনিয়োগ করে সমাজ উন্নয়নে কাজ করছে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক সচিব মিকাইল সিপারকে সম্বোধন করে বলেন, ভাটেরার উন্নয়নে তরুণদের নিয়ে যে পরিকাঠামো তৈরি করেছেন, তাতে শুধু কুলাউড়া নয়-মৌলভীবাজার জেলাকেও নেতৃত্ব দেবে ভাটেরা। ডেঙ্গু নিয়ে এ রকম একটি আলোচনা সভা প্রত্যন্ত অঞ্চলে তো নয়ই কুলাউড়া বা মৌলভীবাজার জেলার কোথাও হয়েছে বলে আমার জানা নেই উল্লেখ করে তিনি ভাটেরিয়ান সিলেট’কে বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান।
ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ এ কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, ভাটেরিয়ান সিলেট আমাদের জন্য যে উপহার নিয়ে এসেছেন, সে উপহার আমাদেরকে প্রাণে বাঁচার বাঁচার সুযোগ করে দিবে। কারণ ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়ায় মানুষ মারা যায়। আমরা ভাটেরিয়ানদের কাছে আছি, পাশে আছি। ভাটেরা থেকে যে সমস্ত রোগী চিকিৎসার জন্য সিলেটে যান তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভাটেরার মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য আমরা ভাটেরিয়ান সিলেট এর কাছে কৃতজ্ঞ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে, ভাটেরিয়ান সিলেট এর আন্তর্জাতিক প্রধান সমন্বয়ক মাহবুবুল মোরশেদ খসরু বলেন, ভাটেরিয়ান সিলেট এর সাথে শুরু থেকে সম্পৃক্ত আছি।

কোরআন তেলাওয়াত করে ভাটেরা গার্লস স্কুলের ছাত্রী সামিয়া আক্তার (সুমা), গীতা পাঠ করে নিশীতা দাস।

ভাটেরিয়ান সিলেট এর সদস্যসচিব শামীম আহমদ ও নির্বাহী সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান খান টিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মশারি বিতরণ অনুষ্ঠানে আরো বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়া, সমাজসেবী শাহ আজিজুর রহমান পারুল, ভাটেরিয়ান সিলেট এর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শফিক মিয়া, ইতালী প্রবাসী সমাজসেবক মাহবুবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক হামিদ খান, ভাটেরা বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল বকুল ও ভাটেরা সাইফুল তাহমিনা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ফয়জুর রহমান ।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ভাটেরা গার্লস স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক কাওসার আহমদ মুন্না, অরবিটাল গ্রুপ এর চেয়ারম্যান মাহবুব খান, মাওলানা আব্দুল করিম, ভাটেরা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক আব্দুস সামাদ, ভাটেরিয়ান সিলেট এর কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রহমান খান প্রমুখ। ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়া প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক তথ্যবহুল বক্তব্য রাখেন ভাটেরিয়ান সিলেট এর যুগ্ম সদস্যসচিব এহসান রেজা খান। অনুষ্ঠান শেষে ইতোপূর্বে রেজিষ্ট্রেশনকৃত পরিবারগুলোকে ২৫০টি মশারি প্রদান করা হয়।