রাগীব আলীর বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক :

শিল্পপতি রাগীব আলীর বিরুদ্ধে পৌনে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের একটি মামলায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার সিলেট মহানগর হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান সিদ্দিকী এই অভিযোগ গঠন করেন।

২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে রাগীব আলীর বিরুদ্ধে ২ লাখ ১৫ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড (বাংলাদেশি টাকা আনুমানিক দুই কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা) আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেছিলেন নাবিদা ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমান গুলজার। পরবর্তীতে মামলাটি মহানগর হাকিম আদালতে স্থানান্তরিত হয়। বাদীর আইনজীবী মোহাম্মদ আলী সিলেটভিউকে আদালত কর্তৃক রাগীব আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালতে শুনানিতে বাদীপক্ষে ছিলেন এডভোকেট কল্যাণ চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিমলেন্দু মিত্র তপন, ফেরদৌস আরা বেগম জেনি ও মোহাম্মদ আলী। আসামিপক্ষে ছিলেন এডভোকেট মঈনুল ইসলাম ও শাহ মোশাহিদ আলী।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘নাবিদা ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের অনুকূলে ২০০৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সাউথ ইস্ট ব্যাংকের মঞ্জুরিপত্রমূলে তিন কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়। মঞ্জুরিকৃত ঋণের মধ্যে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা তিন কিস্তিতে উত্তোলন করে ফাউন্ডেশন। ২০০৮ সালের ৫ জুলাই সাউথ ইস্ট ব্যাংকে বন্ধকীকৃত সম্পত্তির নিলাম বিজ্ঞপ্তি রাগীব আলীর মালিকানাধীন সিলেটের ডাক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। রাগীব আলীর সাথে বাদীর পারিবারিক পূর্বপরিচিতি থাকায় ও তিনি (রাগীব) সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে তার সাথে টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। তখন রাগীব আলী বলেন, তার সাথে যদি যোগাযোগ করে লন্ডনে লেনদেন শেষ না করা হয় তাহলে সম্পত্তি নিলাম হয়ে যাবে।’

নাবিদা ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের বেশিরভাগ পরিচালক ও শেয়ার হোল্ডার যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘রাগীব আলীর কথায় বাদী অন্যান্য শেয়ার হোল্ডারদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তার (রাগীব) সাথে যোগাযোগ করে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব লেনদেন শেষ করা হবে। একপর্যায়ে রাগীব আলীর সাথে শেয়ার হোল্ডারদের সমঝোতা হলে তার (রাগীব) লন্ডনস্থ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নং-০০১৫১০৪ শর্ট কোড ৩০৯০৫৯ লয়েডস টি.এস.বি ব্যাংকে ফাউন্ডেশনের শেয়ার হোল্ডার তোফায়েল আলম তুহিন ৫ হাজার পাউন্ডের একটি চেক (নং- ০৮১২০১, ০৮/০৮/২০০৮ ইংরেজি) প্রদান করে টাকা পরিশোধ করা শুরু করেন। পরবর্তীতে রাগীব আলী চেকে টাকা না নিয়ে নগদে দিতে বলেন। ফাউন্ডেশন নগদে টাকা পরিশোধে রাজি না হলে রাগীব আলী বন্ধকীকৃত সম্পত্তি নিলাম হয়ে যাওয়ার কথা বলেন।’

মামলায় আরো বলা হয়েছে, ‘সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে রাগীব আলীর কথা মতো আখলাকুর রহমান গুলজার বাংলাদেশে ফিরে আসার আগমুহূর্ত পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখে এবং সর্বশেষ ২০০৯ সালের ৩০ মে পর্যন্ত ২ লক্ষ ১৫ হাজার পাউন্ড (তখন এক পাউন্ডের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ছিল ১৩০ টাকা, সে হিসেবে বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক ২ কোটি ৭৯ লক্ষ ৫০ হাজার) নগদ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে রাগীব আলীর নির্দেশ ও পরামর্শ অনুসারে ২০১০ সালের ১০ ডিসেম্বর সুদ মওকুফের জন্য আবেদন করা হয়। কিন্তু পরে জানা যায়, সব টাকাই আত্মসাৎ করেছেন রাগীব আলী।’